গাজা, ৭ মার্চ: ইসরাইলি আগ্রাসনে ফিলিস্তিনের গাজায় খাদ্য সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। এনিয়ে উদ্বেগ প্রকাশও করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)। ন্যূনতম খাবারের আশায় গাজাবাসী যখন লাইনে দাঁড়িয়ে ত্রাণের অপেক্ষা করছে। তখনই ইসরাইলি সেনার গুলিতে নিহত হচ্ছে একের পর এক গাজাবাসী। কদিন আগেই হু জানিয়েছে, গাজা উপত্যকার খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে খাবারের ব্যাপক সংকট থাকা সত্ত্বেও সেখানে খাবার সরবরাহ করতে পারছে না। তল্লাশি কেন্দ্রগুলোতে বিলম্বের ফলে সেখানে কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, জলশূন্যতা এবং পুষ্টিহীনতায় গাজায় ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখবর নিশ্চিত করেছেন গাজার স্বাস্থ্যকর্মীরা। এই ঘটনার পর অঞ্চলটিতে আরও বেশি ত্রাণ পাঠানোর দাবি জোরলো হয়ে উঠছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল কুদরা জানান, এই ২০ জন ছাড়াও ডজন ডজন লোক হাসপাতালে আসার আগেই অনাহারে মারা যাচ্ছেন।
অন্যদিকে, রাষ্ট্রসঙ্ঘের বিশেষ প্রতিবেদক পলা গাভিরিয়া বেটানকুর বলেছেন, গাজার মোট জনসংখ্যার পাঁচ শতাংশ ইজরায়েলি হামলায় নিহত এবং আহত হয়েছেন, বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ৭৫ শতাংশেরও বেশি; এটি বিস্ময়কর। গাজায় শিশুহত্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে ইউনিসেফকে। জাতিসংঘ শিশু তহবিলের (UNICEF) আঞ্চলিক মুখপাত্র সেলিম ওয়েইস বলেছেন, “গাজায় ইসরাইলি হামলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে শিশুরা।” যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের জরুরি পদক্ষেপের আহব্বান জানিয়েছেন তিনি। মুখপাত্রের আরও বক্তব্য, “গাজায় যা ঘটছে তা মানুষের বিবেকের পরীক্ষা। উত্তরাঞ্চলে ত্রাণের অভাবে শিশুদের অবস্থা ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। তাদের স্বাস্থ্যের পরিস্থিতিকে অত্যান্ত খারাপ।”
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে গাজায় লাগাতার হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ধ্বংস হয়েছে। এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৩০ হাজার ৪১০ জন ফিলিস্তিনি নাগরিকের। এরমধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন আরও ৭১ হাজার ৭০০ জন।