পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: পাশ্চাত্যের মডেলকে অনুসরণ নয়। দেশের সংস্কৃতিকে রক্ষা করতে হবে। ভারতে বিবাহের মতো পবিত্র প্রতিষ্ঠানকে সুরক্ষা দিতে হবে। তাকে সংরক্ষণ করতে হবে। এটাই ভারতের ঐতিহ্য, পরম্পরা। মঙ্গলবার এক মামলায় এমনই নির্দেশ দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
এক অবিবাহিত মহিলা সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন, তিনি মা হতে চান। সারোগেসির মাধ্যমে (টেস্টটিউব বেবি) সন্তানের জন্ম দিতে চান। তাঁর সেই আবেদন খারিজ করে দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, পশ্চিমা দেশগুলিতে বিয়ে না করেও সন্তানের জন্ম নেওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু আমদের দেশে এসব চলতে পারে না। ৪৪ বছর বয়সি ওই অবিবাহিত মহিলার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বি ভি নাগরত্না ও বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহর বেঞ্চ আরও জানায়, এভাবে মা হওয়া ভারতীয় আইনে অনুমোদিত নয়। বিবাহের বাইরে একা মহিলার সন্তান ধারণ করা ভারতীয় সমাজে নিয়ম বিরুদ্ধ শুধু নয়, বরং ব্যতিক্রম। বিচারপতি নাগরত্না আরও স্পষ্ট করে বলেন, ‘‘বিয়ের মাধ্যমেই মা হওয়া ভারতীয় সমাজ ও সংস্কৃতিতে একটি নিয়ম। কিন্তু, বিবাহ নামক প্রতিষ্ঠানকে অস্বীকার করে মা হওয়া এখানে নিয়ম বহির্ভূত। এই ধরনের আবেদন নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা শিশুদের, সন্তানদের কল্যাণের দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করে এই কথাগুলো বলছি। দেশে বিবাহের মতো প্রতিষ্ঠানকে টিকে থাকতে হবে। বিয়ে নামক এই পবিত্র সম্পর্ককে আমাদের সুরক্ষিত রাখতে হবে। কারণ, আমরা পশ্চিমা দেশগুলির মতো নই। বিবাহ-প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা করতে হবে। এই মানসিকতার জন্য আপনি হয়তো আমাদের ‘রক্ষণশীল’ বলতে পারেন, কিন্তু তাতে আমদের কোনও আপত্তি নেই। আমরা এই তকমা মেনে নেব।’’
উল্লেখ্য, সারোগেসি আইনে বলা হয়েছে, একমাত্র বিবাহ বিচ্ছিন্ন, বিধবা মহিলারা যাঁদের বয়স ৩৫-৪৫ বছরের মধ্যে তাঁরা সারেগেসির মাধ্যমে মা হতে পারবেন। কিন্তু, কোনও অবিবাহিত মহিলাকে সারোগিসের মাধ্যমে মা হওয়ার অনুমতি আইনে দেওয়া হয়নি। এই মামলায় আবেদনকারী মহিলা একটি বহুজাতিক সংস্থায় কাজ করেন। তিনি সারোগেসি আইনের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশনটি দাখিল করেন। সেইমতো এদিন শীর্ষ আদালতের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ ওই মহিলাকে পরামর্শ দিয়ে বলে, মা হওয়ার আরও উপায় রয়েছে। তিনি বিয়ে করতে পারেন বা সন্তান দত্তক নিতে পারেন। জবাবে ওই মহিলার আইনজীবী বলেন, তাঁর মক্কেল বিয়ে করতে চান না। তাছাড়া দত্তক নেওয়ার জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। তখন আদালত বলে, বিবাহের মতো একটি প্রতিষ্ঠাকে জানালার বাইরে ঝেড়ে ফেলে দেওয়া যায় না। ৪৪ বছর বয়সে একটি সারোগেট শিশুকে লালন-পালন করা কঠিন কাজ। আমরা পাশ্চাত্যের মতো নই যেখানে অনেক শিশু জানেই না তাদের মা-বাবা সম্পর্কে।
![](https://archived.puberkalom.com/wp-content/uploads/2024/06/WhatsApp-Image-2024-06-03-at-7.46.21-PM.jpeg)
![](https://archived.puberkalom.com/wp-content/uploads/2024/06/WhatsApp-Image-2024-06-03-at-7.46.20-PM-1.jpeg)
![](https://archived.puberkalom.com/wp-content/uploads/2024/06/WhatsApp-Image-2024-06-03-at-7.46.20-PM.jpeg)