পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ওরা এতিম, তাই ওদের সঙ্গে যা খুশি করা যায়! এটাই হয়তো ভেবে নিয়েছে সমাজের একশ্রেণির মানুষ। কারণ ওদের দেখার কেউ নেই, মাথার উপর ছাদ নেই, আর সেই ‘আশ্রয়’ দেওয়ার নাম করে নিরীহ, নিষ্পাপ, সরল সাদা-সিধে প্রাণগুলির ওপর অত্যাচার চালানো যায়! যা নির্মমতাকে হার মানায়।
মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরের একটি এতিমখানায় ছোট্ট ভুলের জন্য ২১ জন এতিম শিশুকে চরম শাস্তি দেওয়া হল। ওই এতিমখানার কর্মচারীরা তাদের ওপর এই নির্মম অত্যাচার চালায় বলে অভিযোগ। গত সপ্তাহে শিশু সুরক্ষা কমিটি এলাকায় আচমকাই পরিদর্শন করার পরেই এই ভয়াবহ ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসে।
পুলিশ জানিয়েছে, শিশুরা আধিকারিকদের জানিয়েছিল, ছোটখাটো ভুল করলেই তাদের উপর অত্যাচার চালানো হয়। শিশুরা ওই পরিদর্শনকারি প্রতিনিধি দলকে জানিয়েছে, তাদের মাথা নীচের দিকে আর পা উপর দিকে করে ঝুলিয়ে দেওয়া হত। লোহার রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হত। এমনকী নগ্ন করিয়ে তাদের ছবি তোলা হত। তবে এখানেই অত্যাচার শেষ নয়। লাল লঙ্কার ঝাল দিয়ে তাদের ধোঁয়া টানতে বাধ্য করা হত। এই ঘটনাগুলি প্রকাশ্যে আসতেই ওই অনাথ আশ্রমের পাঁচজন কর্মীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এফআইআরে লেখা হয়েছে, বাথরুমে চার বছরের একটা শিশুকে বাথরুমে আটকে রাখা হয়েছিল। অপরাধ বলতে সে প্যান্টে মলত্যাগ করে ফেলেছিল। এরপরই তাকে কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়। তাকে তিন-চারদিন খেতে দেওয়া হয়নি। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই এতিমখানার নাম বাৎসল্যপুরম জৈন ট্রাস্ট। এটা জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের আওতায় কাজ করে। বেঙ্গালুরু, সুরাট, যোধপুর, কলকাতাতেও তাদের শাখা রয়েছে।
ইন্দোরের অ্যাডিশনার কমিশনার অফ পুলিশ অমরেন্দ্র সিং জানিয়েছেন, সিইসি একটি অভিযোগ জানিয়েছিল। তার জেরেই মামলা করা হয়। এতিমখানাটিকে সিল করে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত কর্মী ছাড়া আর কেউ যুক্ত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।