পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ভোট এলেই সাধারণ মানুষের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বেশি চিন্তিত হয়ে পড়ে বিজেপি নেতৃত্বাধীন মোদি সরকার। জনসাধারণের ‘আপন’ হয়ে ওঠার তাগিদে ভোট বাক্স এই সময় বড় বিষয়। আর তার প্রতিফলন দেখা যায় জিনিসপত্রের দামে। কারণ ভোট এলেই সাধারণ মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমতে থাকে। এই প্রসঙ্গে মোদি সরকারের সমালোচনায় সরব কংগ্রেস সহ বিরোধীরা। ভোটের আগেই মোদি নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারকে গ্যাসের দাম কমাতে দেখে গিয়েছে। কমেছে কেরোসিন তেলের দামও। তিন মাসে ১০ টাকার বেশি কমেছে কেরোসিনের দাম।
ভোটের মুখে মোদি সরকারের এই কল্পতরু ভূমিকাকে সমালোচনা করতে ছাড়েনি কংগ্রেস। কেন্দ্রের এই দাম কমানোকে রাজনৈতিক চাল হিসেবে দেখছে বিরোধীরা। ২০২২ সালের জুন মাসে কেরোসিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ১০০ টাকা অতিক্রম করে গিয়েছিল। সেই সময় কংগ্রেস-সহ দেশের সব বিরোধীদল মোদি সরকারের তেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে সমালোচনায় সোচ্চার হয়। বিরোধীর চাপ বা ভোটের কথা মাথায় রেখে মাত্র দেড় বছরের ব্যবধানে ধাপে ধাপে নরেন্দ্র মোদি সরকার সেই দাম ১০ টাকার বেশি কমিয়েছে।
গত বছর নভেম্বর মাসে ৪ টাকা ১০ পয়সা দাম কমানো হয়েছিল। ডিসেম্বর মাসে আরও এক বার দাম ৪ টাকা ৭০ পয়সা কমানো হয়। আর নতুন বছরের শুরুতেই ২ টাকা ৫০ পয়সা দাম কমানো হয়েছে। তিন দফায় এই দাম কমার ফলে কলকাতা শহরে ৬৯ টাকার কিছু বেশি দরে প্রতি লিটার কেরোসিন পাওয়া যাবে বলে জানানো হয়েছে। জেলা স্তরে সেই দাম হতে পারে ৭২ থেকে ৭৩ টাকা।
কেরোসিনের দাম কমানো নিয়ে কংগ্রেসের বক্তব্য, ভোটের কথা মাথায় রেখেই দেশবাসীর মন জয় করতে এই সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের। এআইসিসি মুখপাত্র মিতা চক্রবর্তী বলেছেন, ‘ভোটের আগে শুধুমাত্র চমক দিতে কেরোসিন তেল-সহ রান্নার গ্যাস এবং আরও অনেক জিনিসের দাম কমাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। ২০১৪ সালে ইউপিএ সরকারের আমলে পেট্রলজাত পণ্যের মূল্য কী ছিল, আর এখন দাম কোথায় পৌঁছেছে তা সাধারণ মানুষ দেখছেন। আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের এই দাম কমানোর নীতির তীব্র সমালোচনা করছি, কারণ এমন সিদ্ধান্ত শুধু ভোটের কথা মাথায় রেখেই নেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে সাধারণ মানুষের সুবিধা-অসুবিধার সম্পর্ক নেই।
ওয়েস্ট বেঙ্গল কেরোসিন ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অশোক গুপ্ত বলেন, ‘আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কেরোসিন তেলের দাম নির্ধারণে স্পষ্ট কোনও নীতি তৈরি করছে না কেন্দ্রীয় সরকার। আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। কারণ আমাদের এই লড়াই গরিবের জন্য।
তিনি আরও বলেন, ‘এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে রাজ্য সরকারের ভূমিকারও আমরা সমালোচনা জানাচ্ছি। কারণ কেরোসিন তেলের দাম বরাদ্দ করার প্রক্রিয়া করা নিয়ে রাজ্যের ভূমিকাও সন্তোষজনক নয়’। (৩৭৭)