পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: রাষ্ট্রসংঘ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ওআইসি-সহ বিভিন্ন সংগঠন ও দেশ থেকে যতই চাপ দেওয়া হোক, নিজের একগুঁয়েমিতে অটল রয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তার নির্দেশে গাজায় অব্যাহতভাবে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে সেনাবাহিনী। তাতে প্রতি ক্ষণ মারা যাচ্ছেন নিরীহ গাজাবাসী। নিহতের সংখ্যা এখন ২২ হাজার পার। রাষ্ট্রসংঘ বলছে, এক লক্ষের বেশি বাস্তুচ্যুত গাজাবাসী দক্ষিণ সীমান্ত এলাকায় গিয়ে এই শীতে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছেন। কিন্তু বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু আরও ঔদ্ধত্য দেখিয়ে বলেছেন, গাজা ও মিশর সীমান্ত এলাকাও ইসরাইলের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, গাজা ও অন্য ফ্রন্টের যুদ্ধ বহু মাস ধরে চলতে পারে। গাজায় ইসরাইলের হামলার ১৩তম সপ্তাহ উপলক্ষে সাংবাদিক সম্মেলন করেন নেতানিয়াহু। তা থেকে যোদ্ধাগোষ্ঠী হামাসকে নির্মূল এবং তাদের হাতে থাকা সব জিম্মিকে মুক্ত করে দেশে ফেরানোর প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ফিলাডেলফি করিডোর বা গাজার দক্ষিণে স্টপেজ পয়েন্ট অবশ্যই আমাদের হাতে থাকা উচিত। এটা অবশ্যই বন্ধ করে দেওয়া উচিত। আমরা যে নিরস্ত্রীকরণ চাইছি তা অন্য কোনও উপায়ে অর্জন সম্ভব নয়।
গাজা থেকে হামাসকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার প্রত্যয় আগেই ঘোষণা করেছেন নেতানিয়াহু। একই সঙ্গে ৭ অক্টোবরের মতো ঘটনা যাতে আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে তা নিশ্চিত করতে চান তিনি। নেতানিয়াহু বলেন, যুদ্ধ সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। আমরা সব ফ্রন্টে যুদ্ধ করছি। এক্ষেত্রে বিজয় অর্জন করতে সময় প্রয়োজন। ইসরাইলি সেনাবাহিনীর প্রধান বলেছেন, এই যুদ্ধ বহু মাস ধরে অব্যাহত থাকবে। এ সময় তিনি ইরানকে সাবধান করে দেন। বলেন, ইরানের সমর্থনপুষ্ট লেবাননের সশস্ত্র গ্রুপ হিজবুল্লাহ যদি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে, তাহলে তাদেরকে উড়িয়ে দেওয়া হবে। এমন আঘাত করা হবে যা তারা স্বপ্নেও দেখেনি। এ আঘাত করা হবে ইরানেও। তবে এ বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু বলেননি। এখানে উল্লেখ্য, ইসরাইল ও হামাসের মধ্যকার এই যুদ্ধ আঞ্চলিক পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা আগে থেকেই করা হচ্ছে। বার বার হিজবুল্লাহর সঙ্গে সংঘর্ষ হচ্ছে ইসরাইলি সেনাদের। বিভিন্ন মহল থেকে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা ব্যক্ত করে সতর্ক করা হচ্ছে। কিন্তু নেতানিয়াহু যে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তাতে তিনি সেসব সতর্কতার ধার ধারছেন না বলেই মনে হচ্ছে। বিশেষ করে লেবানন, সিরিয়া, ইরাক এবং ইয়েমেনে ইরানপন্থী বিভিন্ন গ্রুপ রয়েছে। নেতানিয়াহুর হুমকিতে তাদের মধ্যেও প্রতিক্রিয়া হবে। ফলে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পাবে। যেকোনও সময় এই উত্তেজনা যেকোনও রূপ ধারণ করতে পারে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, হামাস লড়ছে অস্তিত্বের জন্য আর ইসরাইল লড়ছে গাজার মাটির জন্য। ভূমি দখলের ক্ষুধায় সে গণহত্যার উন্মাদনায় বিভোর। নেতানিয়াহুর ভূমির আগ্রাসী চিতায় জ্বালানি সরবরাহ করছে খোদ আমেরিকা আর ব্রিটেন। বিশ্ব বিবেক অন্ধ। রাষ্ট্রসংঘ, মানবাধিকার সংস্থা এসবই এখন কাগুজে প্রতিষ্ঠান।