পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক : গত শনিবার রাতে ইন্দোনেশিয়ায় ফুটবল মাঠে দাঙ্গা ও পদপিষ্ট হয়ে যে ১২৫ জন মানুষ মারা গিয়েছে, তার মধ্যে নাকি রয়েছে ৩২জন শিশু। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে ঘটে যাওয়া এই অঘটনকে বিশ্বের সবচেয়ে নিকৃষ্ট স্টেডিয়াম বিপর্যয়গুলোর মধ্যে একটি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।ইন্দোনেশিয়ার ফুটবলে দীর্ঘদিন ধরে এই দাঙ্গা-হাঙ্গামা যেন মিলেমিশে গিয়েছে।
সেই দুর্ঘটনায় আহমেদ কাহিও (১৫) ও মুহাম্মদ ফারেল (১৪) নামের দুই ভাইও নিহত হয়। জানা গিয়েছে, দুই ভাই ফুটবল দারুণ পছন্দ করত। আরেমা ক্লাবের খেলা এর আগে কখনোই কানজুরুহান স্টেডিয়ামে বসে সরাসরি দেখেনি তারা। এটিই ছিল তাদের প্রথমবার খেলা দেখতে যাওয়া। আর এটাই তাদের শেষ ফুটবল ম্যাচ খেলা দেখা।
এরইমধ্যে ইন্দোনেশিয়ার একাধিক দৈনিক পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠা কালো রঙে বের করেছে।
সেখানেই ‘আমাদের ফুটবল ট্র্যাজেডি’ লিখে মৃতদের তালিকা লাল রঙে প্রকাশিত হয়েছে। সেখানেই ফুটে উঠেছে ৩২জন শিশুর নাম। ইন্দোনেশিয়ার নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা নাহার বলেন, ‘ফুটবল মাঠের দাঙ্গায় বহু শিশু মারা গিয়েছে। অনেকের চিকিৎসা চলছে। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।’ জানা গিয়েছে, সেদিনে আরেমা এফসি ওই ম্যাচে দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী পার্সেবায়া সুরাবায়ার কাছে ৩-২ গোলে হেরে যায়। এরপরই স্টেডিয়ামে দাঙ্গা শুরু হয়। যদিও ম্যাচ আয়োজক কর্তৃপক্ষ জানায়, নিরাপত্তার কারণে পার্সেবায়া সুরাবায়ার ভক্তদের টিকিট দেওয়া হয়নি। সেই ক্ষোভে তারা নাকি এমনটা ঘটিয়েছে।
শনিবার রাতে ইন্দোনেশিয়ার পূর্বাঞ্চলের মালাং শহরের কানজুরুহান ফুটবল স্টেডিয়ামে ম্যাচে দুই দলের হার-জিত নিয়ে অশান্তির ঘটনা ঘটে। তা রুখতে স্থানীয় পুলিশ টিয়ারগ্যাস ও রাবার বুলেট ছুঁড়তে থাকে। সেটা থেকে বাঁচতে হুড়োহুড়ি করতে গিয়ে পদদলিত হন বেশিরভাগ সমর্থক। এ ব্যাপারে ফিফার নিরাপত্তা নীতি কিন্তু ম্যাচের সময় মাঠে আগ্নেয়াস্ত্র বা ভিড় নিয়ন্ত্রণে গ্যাস ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, তাহলে নিরাপত্তারক্ষীরা কিভাবে নিয়ম ভাঙলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। বিষয়টি মাথায় রেখে ফিফা ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল কর্তৃপক্ষের কাছে ওই ঘটনার একটি রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে।
এ ব্যাপারে ইন্দোনেশিয়া পুলিশ জানিয়েছে, হারের পর স্টেডিয়ামে থাকা আরেমার দর্শকেরা মাঠে নেমে অশান্তি সৃষ্টি করেন। তাদের থামাতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। ঝামেলা রুখতেই তারা এটা করেছিল। অশান্তি বাড়াতে নয়।