নয়াদিল্লি, ১০ মার্চ: শনিবার দেশের নির্বাচন কমিশনার অরুণ গোয়েল আচমকাই পদত্যাগ করেছেন। ফলে কমিশনারের দুটি পদ শূন্য হয়েছে। ১৫ মার্চের মধ্যে সেখানে কেন্দ্রের দু’জন পছন্দসই লোক বসতে চলেছে বলে সূত্রের খবর। কেন্দ্রের সংস্কৃতি সচিবের পদ থেকে অরুণ গোয়েলের স্বেচ্ছায় অবসর যতটা চমক সৃষ্টি করেছিল, তার চেয়ে বহুগুণ বেশি জন্ম দিয়েছিল রাজনৈতিক বিতর্কের। সেসব ছাপিয়ে লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে ভারতের নির্বাচন কমিশনারের পদ হুট করে তিনি কেন ছেড়ে দিলেন, তা সৃষ্টি করেছে এক জিজ্ঞাসার। মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে মতপার্থক্যই কি অরুণ গোয়েলের ইস্তফার কারণ? একাংশের কাছে তাৎপর্যের কলকাতায় ৫ মার্চ গ্র্যান্ড হোটেলে নির্বাচন কমিশনের সাংবাদিক বৈঠক। সেই সাংবাদিক বৈঠকে ছিলেন না অরুণ গোয়েল। কেবল বিবেক কুমারই কথা বলেন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে। বিবেক কুমার জানিয়েছিলেন অসুস্থতার কারণে দিল্লিতে ফিরে গিয়েছেন গোয়েল। তবে তার ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন শরীর পুরোপুরি ঠিক ছিল গোয়েলের। বাংলা নিয়ে কমিশনের বেশকিছু সিদ্ধান্তে তার আপত্তি ছিল বলে জানা যাচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এ নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বও। মোদি সরকারের জি-হুজুরি না করতে চাওয়ায় তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ। মহুয়া মৈত্রর দাবি, দিল্লির নেতাদের আজ্ঞাবহ হতে তিনি রাজি হননি। মতবিরোধ চলছিল।
নির্বাচন কমিশনের মোট সদস্য তিনজন। একজন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ও দুজন নির্বাচন কমিশনার। সিইসি হলেন রাজীব কুমার। এক মাস আগে ফেব্রুয়ারিতে মেয়াদপূর্তির ফলে ইসির পদ থেকে অবসর নিয়েছেন অনুপচন্দ্র পান্ডে। তার পদে এখনও কেউ নিযুক্ত হননি। অরুণ গোয়েল পদত্যাগ করায় তিন সদস্যের কমিশন এখন একজনের। এতকাল নির্বাচন কমিশনারের নিয়োগ করতেন প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার বিরোধী নেতা এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগে অংশগ্রহণের দাবি নিয়ে বিচার বিভাগের সঙ্গে সরকারের টানাপোড়েন অব্যাহত। সেই অমীমাংসিত রেষারেষির দরুন প্রধান বিচারপতিকে ওই দায়িত্ব থেকে সরকার অব্যাহতি দিয়েছে। নতুন আইনে নির্বাচন কমিশনের তিন সদস্যকে নিয়োগ করবেন প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার কোনো এক শীর্ষ সদস্য।