পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ বারুইপুরে চোর সন্দেহে এক প্রোমোটারকে পিটিয়ে খুনের ঘটনা ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে। মৃতের পরিবারের তরফ থেকে পরিকল্পনা করে খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে। একজন প্রোমোটারের সঙ্গে চুরির কি সম্পর্ক থাকতে পারে, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এদিকে এই ঘটনায় নাম জড়িয়েছে এক বার ড্যান্সারের। তিনি মৃতের বান্ধবী। মৃত যুবকের নাম অভীক মুখোপাধ্যায় (৩৫)। ঘটনাটি ঘটেছে বারুইপুরের বেগমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০০ কলোনিতে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বার ড্যান্সার বান্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে রাতের অন্ধকারে বাইক নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন অভীক। তখনই চোর সন্দেহে প্রোমোটারকে পাকরাও করে গ্রামবাসীরা। বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে অভীক মুখোপাধ্যায় নামে ওই প্রোমোটারকে বেধড়ক মারধর করে। সংজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার করে অভীককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা অভীককে মৃত বলে জানান।
পুলিশ সূত্রে খবর, অভীকের বান্ধবীর নাম প্রিয়াঙ্কা সরকার। পেশায় বার ড্যান্সার তিনি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গত কয়েকদিন ধরেই গ্রামে ছাগল চুরির ঘটনা ঘটছে। এর ফলে বাড়ির পুরুষরা পালা করে রাত জাগছে। বৃহস্পতিবার রাত সোয়া দুটো থেকে ২টো নাগাদ দুজন ছায়ামূর্তিকে দেখে তারা। এমনকী একজনকে ছাগল নিয়ে পালাতে দেখে। সেই সময় চারদিক থেকে কুকুর, ছাগল ডেকে ওঠে বলে অভিযোগ। এর পরেই উন্মত্ত জনতা মারমুখী হয়ে ওঠে। তারা একসঙ্গে বহু লোক জড়ো হয়ে, অভীককে মারতে শুরু করে। সেই সময় অভীকের বান্ধবী লুকিয়ে পড়ে বলে। অন্যদিকে গ্রামবাসীদের মারে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন অভীক। এর পর স্থানীয়দের মারফত খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে প্রোমোটার অভীক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে জানান। এদিকে পুলিশের গাড়ি আটকেও বিক্ষোভ দেখায় স্থানীয় মানুষ।
প্রোমোটারের বন্ধুদের অভিযোগ, পরিকল্পনা করেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। অন্যদিকে, প্রিয়াঙ্কার মা জানান, তার মেয়ে সাইকো পেসেন্ট। ছয়মাস ধরে অসুস্থ। রাতের বেলা ঘোরাঘুরি করত। আমি বারণ করতাম। তবে ও একটি বারেও কাজ করে। গতকালও বলল বের হচ্ছি, তার পরে আর ফিরে এল না। তবে ও যদি কোনও দোষ করে থাকে তাহলে ও শাস্তি পাক।
মৃত প্রোমোটারের মা জানিয়েছেন, এইভাবে ছেলেকে কিভাবে মারা হল। মানুষ কিভাবে এত নৃশংস হতে পারে। বাইক নিয়ে আমার ছেলে বের হতেই পারে। তাই বলেই এইভাবে পিটিয়ে মেরে ফেলবে। যারা এই জঘন্য কাজ করল আমি তাদের ফাঁসির সাজা চাই’। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বারুইপুর থানার পুলিশ।