পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: সমাজে কতই না আজব ঘটনা ঘটে। এই ঘটনাটি তার ব্যতিক্রম নয়। সমস্য যখন ইঁদুরকে নিয়ে! ইঁদুরের উৎপাতের কথা কারুর অজানা নয়। ঘর থেকে চাষের জমি কোনও জায়গাতেই এদের দৌরাত্ম্য কম নয়। ওদের লক্ষ্য খালি সুযোগের অপেক্ষা। এবার সেই ইঁদুরের তাণ্ডবে নাভিশ্বাস উঠেছে বাংলাদেশের গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলায়। কারণ সেখানকার কৃষকদের প্রধান ফসল বোরো ধান। আর সেই বোরো ধানগাছ কেটে ও ধানের ছড়া কেটে নিজের আখের গোছাচ্ছে ইঁদুর। বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। কারণ প্রত্যাশা মতো ফলন মিলছে না। নানানভাবে ইঁদুর নিধনের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছেন কৃষকরা। তবে এখন পর্যন্ত কী পরিমাণ জমির ফসল ইঁদুর নষ্ট করেছে তার হিসেব জানাতে পারেনি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।
প্রসঙ্গত, ধানের গাছ রোপনের পরে ক্ষেতে পোকামাকড়ের উৎপাত শুরু হয়। কীটনাশক প্রয়োগ করে এটি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। তারপরই হানা দেয় ইঁদুরেরা। শুরু হয় তাদের দাপাদাপি। উপজেলার ডুমুরিয়া ইউনিয়নের পাকুড়তিয়া বিল, পাটগাতী ইউনিয়নের গিমাডাঙ্গার বিল, গোপালপুর বিলসহ কয়েকটি বিলের ধানগাছের নিচের অংশ খেয়ে ফেলেছে ইঁদুর। এতে মারা যাচ্ছে গাছ। কৃষকদের সহযোগিতায় মতবিনিময় সভা, মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।
এই অবস্থায় উপায় কি? টুঙ্গিপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসের ঘোষণা এছাড়াও চৈত্র মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে ইঁদুর মেরে লেজ জমা দিলেই ১০ টাকা মিলবে। কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় ৮,৬০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬১,৯০২০ মেট্রিক টন। কৃষকদের কথায়, বোরো ধানই আমাদের প্রধান ফসল। এই ধানের গাছ রোপণের পর পোকার আক্রমণ শুরু হয়। কৃষি বিভাগের পরামর্শে সেটি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এখন ইঁদুরের উপদ্রব শুরু হয়েছে।” ক্ষেতের চারপাশে ইঁদুর মারার ফাঁদ তৈরি করে রাখা হয়েছে। কেউ কেউ খাবারে বিষ মিশিয়ে ক্ষেতের চারপাশে রেখে দিয়েছেন। কাজ হচ্ছে না কিছুই। ইঁদুর নিধন হচ্ছে না কিছুই। উলটে গাছ মরে যাচ্ছে। ধানের উৎপাদন অর্ধেকে নেমে আশার আশঙ্কায় মাথায় হাত পড়েছে চাষিদের।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা সূত্রে খবর, চলতি বোরো মৌসুমে ইঁদুরের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই ইঁদুর দমনে কৃষকদের উৎসাহিত করতে, আলোচনা সভা, মাইকিং, লিফলেট বিতরণ করছি। পাশাপাশি বিভিন্ন ধর্মীয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আমরা ইঁদুর দমন নতুন কৌশলের বার্তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। চৈত্র মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত ইঁদুরের লেজপ্রতি ১০ টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা করা হয়েছে। উপ-সহকারি উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা লেজের হিসেব রাখবেন। ৩০ চৈত্রের পর কৃষকের প্রাপ্য টাকা দেওয়া হবে। তবে এখনও পর্যন্ত ইঁদুর কত বিঘা জমির ধান ক্ষতি করেছে তা জানা সম্ভব হয়নি। সমস্তটাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।