বিশেষ প্রতিবেদন: সমুদ্রের তলায় গান গায় তিমিরা! তিমি নিয়ে গবেষণা চালিয়ে ডেনমার্কের গবেষকরা বলেছেন, তিমিদের গান গাওয়ার রহস্য ভেদ করতে পেরেছেন তারা। হাম্পব্যাক ও বালিন প্রজাতির তিমি নিয়ে তাঁদের দাবি, এ ধরনের তিমির শরীরে বিশেষ এক ধরনের ‘ভয়েস বক্স’ বা স্বর তৈরির স্থান থাকে। তিমি এই স্বরযন্ত্র বা ভয়েস বক্সের মাধ্যমে পানির নিচে গানের মতো শব্দ তৈরি করে। এই শব্দ দিয়ে তিমি সঙ্গীর খোঁজ করে ও তার সঙ্গে যোগাযোগ করে। গবেষণা সংক্রান্ত নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে নেচার সাময়িকীতে। ওই নিবন্ধে গবেষকদের দাবি, সমুদ্রে চলাচলকারী জাহাজ যে শব্দ তৈরি করে, তা তিমির যোগাযোগ প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে। অনেক সময় জাহাজের শব্দের কারণে তিমিরা তাদের পথ হারিয়ে ফেলে। গবেষক দলের প্রধান সাউদার্ন ডেনমার্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কোয়েন ইলিম্যানস বলেন, তিমির টিকে থাকার জন্য শব্দ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই শব্দ ব্যবহার করেই তারা সমুদ্রে সঙ্গী খুঁজে বের করে। গবেষকদের মতে, তিমির গানের যে তরঙ্গদৈর্ঘ্য থাকে, তা খুবই স্বল্প। এটি অনেক সময় জাহাজের তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সঙ্গে মিলে যায়। অধ্যাপক কোয়েন আরও বলেন, এই গ্রহে বসবাসকারী রহস্যময় প্রাণীদের একটি হচ্ছে তিমি। তারা অত্যন্ত বুদ্ধিসম্পন্ন ও অতিমাত্রায় সামাজিক প্রাণী। নীল, হাম্পব্যাক, ধূসর তিমির মতো ১৪ প্রজাতির তিমির মধ্যে বালিন একটি। এ তিমির দাঁতের পরিবর্তে বালিন নামের একধরনের থালা থাকে। এটি ব্যবহার করে পানি থেকে ছোট প্রাণীর বিশাল বহরকে খেতে পারে তারা। কিন্তু এত দিন এই তিমি কীভাবে রহস্যময় গান গাইত, তা বের করা সম্ভব হয়নি। গবেষক ইলিম্যানস দাবি করেন, তিমির গান গাওয়ার বিষয়টি বের করা তাঁদের জন্য দারুণ রোমাঞ্চকর ছিল। গবেষকেরা বলেন, মানুষের ক্ষেত্রে কণ্ঠনালির মধ্যে বাতাস থেকে যে কম্পন তৈরি হয়, তা থেকে স্বর আসে। কিন্তু তিমির ক্ষেত্রে স্বরযন্ত্রের ওপরে ইংরেজি ইউ অক্ষরের মতো একটি চর্বির স্তর থাকে। এই গঠনের কারণে বায়ু পুনর্ব্যবহার করে গান গাইতে পারে তিমি। এতে স্বরযন্ত্রে পানিও ঢুকতে পারে না।