পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ আমেরিকায় পুলিশের হাতে ফের কৃষ্ণাঙ্গ হত্যা। এবার যাকে হত্যা করা হল তাঁর বয়স ২৫। তরতাজা এই যুবককে লক্ষ্য করে ৯০ রাউন্ড গুলি চালিয়েছে পুলিশ। এর মধ্যে ৬০টি গুলি কৃষ্ণাঙ্গ যুবকের দেহকে এফোঁড় ওফোঁড় করে দিয়েছে। পুলিশের দাবি, গত সোমবার রাতে ওহিও অঙ্গরাজ্যের অ্যাক্রন শহরের ট্রাফিক সিগন্যাল ভেঙে জেল্যান্ড ওয়াকার নামে এক কৃষ্ণাঙ্গ চালক দ্রুত গতিতে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
পুলিশ তার পিছু নিয়ে গাড়ি থামাতে বলে। কিন্তু ওই কৃষ্ণাঙ্গ যুবক গাড়ি না থামিয়ে গুলি চালান। তারপর গাড়ি থেকে নেমে পালানোর চেষ্টা করেন। পুলিশ বলে, ‘পালানোর সময়ে ওই ব্যক্তি ফের গুলি চালাতে পারেন এমন সন্দেহে আমরা গুলি চালাতে বাধ্য হই।’ যদিও কৃষ্ণাঙ্গ যুবকটির গুলি করার প্রমাণ দিতে পারেনি পুলিশ। পুলিশের গুলিতে নিহত কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জেল্যান্ডের পরিবারের আইনজীবী দাবি করেছেন, পুলিশ সেদিন প্রায় ৯০ রাউন্ড গুলি চালিয়েছিল, যার মধ্যে অন্তত ৬০টি জেল্যান্ডের শরীরে ঢুকেছে।
অসংখ্য গুলিতে তার মুখমণ্ডলও ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিল। এ ঘটনার পর আমেরিকার বুকে কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের স্মৃতি ফের একবার উসকে উঠল। ইতিমধ্যে এই হত্যার প্রতিবাদ দেশটির বিভিন্ন শহরে বেশ বিক্ষোভ মিছিল করছে সাধারণ মার্কিনিরা। ধীরে ধীরে এই বিক্ষোভ বড় হচ্ছে। হামলার আশঙ্কায় শহরের পুলিশ সদর দফতরের সামনে বাড়তি কাঁটাতার ও ব্যারিকেড লাগানো হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে শহরবাসীকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার ও মেয়র।
ওহিও অঙ্গরাজ্যের বিভিন্ন শহরে গত কয়েকদিন ধরে ব্যাপক বিক্ষোভ আয়োজিত হয়েছে। ২৫ বছর বয়সি জেল্যান্ড ওয়াকার পেশায় ডেলিভারি বয় ছিলেন। জেল্যান্ড শান্ত ও ভদ্র স্বভাবের, জানিয়েছেন তাঁর প্রতিবেশী ও আত্মীয়রা। কৃষ্ণাঙ্গ যুবকটি সত্যিই পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল কিনা তা নিয়ে একাধিক সওয়াল উঠছে। তাঁর সঙ্গে কোনও আগ্নেয়াস্ত্র ছিল কি না, সে বিষয়েও পুলিশ নীরব। ফলে প্রশ্ন উঠছে, এ ভাবে তাঁকে হত্যা করা হল কেন? উল্লেখ্য, মার্কিন পুলিশের বিরুদ্ধে কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার অভিযোগ নতুন নয়। সেদেশের বহু পুলিশ অফিসারই শ্বেতাঙ্গবাদী মতাদর্সে বিশ্বাসী হয়ে এই ধরনের মানবতা বিরোধী ও অপরাধমূলক কাজ করে বসেন।