পুবের কলম,ওয়েবডেস্কঃ উত্তরপ্রদেশ সরকারের আরও এক মুসলিম-বিদ্বেষী সিদ্ধান্ত। সরকারি মাদ্রাসার যে সকল শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা হজ ও উমরাহ করতে গিয়েছিলেন, তাঁদের বেতন কেটে শাস্তির নিদান দেওয়া হয়েছে। অথচ, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ছুটি নিয়েই তাঁরা ধর্মীয় আচার পালন করতে গিয়েছিলেন। ইউপি সরকার-পোষিত আরবি মাদ্রাসার শিক্ষক সংগঠনের জমা দেওয়া এক অভিযোগ থেকে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।
উত্তরপ্রদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা পরিষদের অধীনে ১৬৪৬০টি মাদ্রাসা রয়েছে। এদের মধ্যে সরকারের কাছ থেকে অনুদান পায় মাত্র ৫৬০টি মাদ্রাসা। শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের বেতন দেয় সরকার। ২০১৬ সালের মাদ্রাসা রুল অনুযায়ী, মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষকরা যে ছুটি পান, সেই ছুটি পাবেন মাদ্রাসার শিক্ষকরাও। এই আইন থাকা সত্ত্বেও মাউ, আজমগড়, মহারাজগঞ্জ, কুশীনগর, আম্বেদকরনগর, অযোধ্যা, বলরামপুর ও ভাদোহীর জেলা সংখ্যালঘু কর্মকর্তারা (ডিএমও) কিছু শিক্ষকের বেতন কেটে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁদের ‘অপরাধ’ হজ ও উমরাহ করতে যাওয়া। বিস্ময়ের ব্যাপার হল, নিজেদের প্রাপ্য ছুটিতেই এই শিক্ষকরা আরব-ভূমিতে গিয়েছিলেন। কামাই করে নয়। তারপরেও ডিএমও-রা এই প্রাপ্য ছুটিকে অনুমোদন দেননি। বিদ্বেষের শিকার এই শিক্ষকদের অভিযোগ, ডিএমও-রা ইচ্ছামতো নির্দেশ দিচ্ছেন এবং এই বেতন কেটে নেওয়া আইন বহির্ভুত।
এখানেই শেষ নয়, এই শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধিকে আটকে দিতে মাদ্রাসার পরিচালন কমিটি ও অধ্যক্ষদের চাপ দিচ্ছেন জেলা সংখ্যালঘু কর্মকর্তারা। মাউয়ের জামিয়া আলিয়া আরাবিয়ার শিক্ষক রাশিদুজ্জামান মাদানি রমজান মাসে উমরাহ করতে গিয়েছিলেন। অযোধ্যার মাদ্রাসা আল জামিয়াতুল ইসলামিয়ার শিক্ষক মহম্মদ রেহান সৌদি আরব হজ করতে গিয়েছিলেন ছুটি নিয়েই। এখন তাঁদের বেতন কেটে নেওয়া হচ্ছে। আরবি মাদ্রাসার শিক্ষক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হাজি দিওয়ান সাহেব জামান খান বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ওই শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা নিয়ম ও আইন মেনেই হজ ও উমরাহ করতে গিয়েছিলেন। অথচ পঞ্চাশের বেশি শিক্ষকের বেতন কাটার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা সংখ্যালঘু কর্মকর্তারা। দিওয়ান সাহেব বলেছেন, “এ অন্যায়।” সংখ্যালঘু কল্যাণ ও ওয়াকফ দফতরের অতিরিক্ত মুখ্য সেক্রেটারি এস মনিকা গর্গকে তিনি এ সম্পর্কে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। এমন নির্দেশ বাতিল করতে তিনি অনুরোধ করেছেন সেক্রেটারিকে।