পুবের কলম প্রতিবেদক: কথায় বলে ‘ঠ্যালার নাম বাবাজি!’ রাজ্যের পাট শিল্পের দূরবস্থা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই মোদি সরকারের বিরুদ্ধে বেসুরো ছিলেন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং। নিজের দলের সরকারের ভ্রান্তনীতির বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আন্দোলনের হুমকিও দিয়েছিলেন। এ বিষয়ে সরব হতে শুক্রবার চিঠি পাঠিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। আর তাতেই কার্যত ঘুম ভাঙল বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের।
ব্যারাকপুরের বিদ্রোহী সাংসদকে দলে ধরে রাখতে শনিবার সকালেই ফোন করে তাঁকে জরুরি ভিত্তিতে দিল্লিতে তলব করেছেন কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। সেই বার্তা পেয়ে বিকালের বিমানেই দিল্লি উড়ে গিয়েছেন অর্জুন। রাতেই সমস্যা মেটাতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে বিশেষ নৈশভোজে বসেছেন। যদিও বিদ্রোহের রাস্তা থেকে সরে আসার কোনও ইঙ্গিত দেননি।
রাজ্যে পাটশিল্পের দূরবস্থা নিয়ে ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ গত কয়েকদিন ধরে যেভাবে সরব হয়েছেন, তাতে বেজায় অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বকে।
দিল্লিতে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে পাঠানো বিশেষ বার্তায় অর্জুন দলবদল করতে পারে বলে আশঙ্কাও জানিয়েছিলেন। বাবুল সুপ্রিয়র পরে যাতে ব্যারাকপুরের সাংসদ দল না ছাড়ে তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন। যদিও পরিস্থিতির দিকে তীক্ষ্ণ নজর রেখে চলেছিলেন পদ্ম শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতারা। কিন্তু এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া অর্জুনের সাক্ষাৎকারেই প্রমাদ গোনেন তাঁরা। ওই সাক্ষাৎকারে কার্যত দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে ব্যারাকপুরের সাংসদ বলেছিলেন, আমি যদি রাজনৈতিকভাবে শিবির বদলের সিদ্ধান্ত নিই, তাহলে কারও ক্ষমতা নেই আটকাবে।’
ওই সাক্ষাৎকারের পরে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়ে দলবদলের জল্পনায় আরও ইন্ধন জুগিয়েছিলেন অর্জুন।
বঙ্গে এমনিতেই দল ক্রমশ তলানিতে গিয়ে ঠেকছে। উল্টে ব্যারাকপুরের সাংসদের মতো দাপুটে নেতা দল ছাড়লে শিল্পাঞ্চলে দল সাইনবোর্ড সর্বস্ব সংগঠন হয়ে উঠবে এমন আশঙ্কায় নড়েচড়ে বসে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব।
সূত্রের খবর দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশেই ব্যারাকপুরের বাগী দলীয় সাংসদকে আলোচনার জন্য দিল্লি তলব করেন কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। ফোনে জানান, রাত দশটায় অর্জুনের সঙ্গে দেখা করতে চান তিনি৷ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন ব্যারাকপুরের সাংসদকে দিল্লিতে তলব করে তাঁর মনোভাব বুঝে নিতে চাইছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। তিনি দল বদল করতে পারেন সেই আশঙ্কাতেই তাঁকে জরুরি দিল্লি তলব করা হল কিনা জানতে চাওয়া হলে ব্যারাকপুরের সাংসদের জবাব, বিষয়ে আমি কী বলব! কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ডেকেছেন। তাঁর কাছে সব কিছু আবারও খুলে বলব। উনি কী ব্যবস্থা নেন দেখি। তার পরেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।’