পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: উত্তরপ্রদেশে মুখ্যমন্ত্রী ‘গণবিবাহ’ প্রকল্প নিয়ে বার বার মুখ পুড়ছে যোগী সরকারের। প্রকল্পের টাকার লোভে একের পর ভুয়ো বিবাহের খবর সামনে আসছে। আর ঘটনাগুলি লোকসভা ভোটের আগে মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে উত্তরপ্রদেশ সরকারের। এবারেও প্রকল্পের নামে সামনে এল এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। সরকারি টাকা হাতাতে দিদিকে বিয়ে করে বসলেন ভাই। দুর্নীতির খবর ছড়িয়ে পড়তেই নড়েচড়ে বসেছেন সরকারি আধিকারিকেরা। ভাই-বোনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, ‘মুখ্যমন্ত্রী গণবিবাহ প্রকল্পে’ কনেকে ৫১ হাজার টাকা দেয় উত্তরপ্রদেশ সরকার। তার মধ্যে ৩৫ হাজার টাকা পায় কনে। এছাড়া বিয়ের সরঞ্জাম কেনা এবং অনুষ্ঠানের জন্য দেওয়া হয় ১০ হাজার ও ৬ হাজার টাকা। সেই টাকা হাতাতে ভুয়ো কাগজপত্র তৈরি করেন লক্ষ্মীপুর ব্লকের কাজরি গ্রামের বাসিন্দা প্রীতি যাদব। এরপর সরকারের খাতায় বিয়ে প্রমাণ করতে নিজেরই ভাই কৃষ্ণের সঙ্গে বিয়ের পরিকল্পনা সেরে ফেলেন তিনি। এই সরকারি টাকা হাতাতে বেলাগাম দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে উত্তরপ্রদেশের জেলায় জেলায়। সরকারি পঞ্চায়েত আধিকারিকের উপস্থিতিতে রীতি মেনে বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার পর বিয়ের ছবি তুলে সরকারের কাছে টাকার অনুমোদনের জন্য পাঠানো নয়। আরও চাঞ্চল্যকর খবর, প্রীতি ইতিমধ্যেই বিবাহিত। তার স্বামীর নাম রমেশ।
স্থানীয় পুরন্দরপুর থানায় এই ভুয়ো বর-বধূর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন খোদ এডিও চন্দন পাণ্ডে। শুধু তাই নয়, এই ভুয়ো বিয়ের আসরে উপস্থিত ছিলেন কাজরি গ্রাম পঞ্চায়েতের সরকারি আধিকারিক মিলিন্দ চৌধুরী। প্রাথমিক তদন্তে তাঁর অপরাধ প্রমাণ হওয়ায় তাঁকে বরখাস্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি ইন্দ্রেশ ভারতী নামে আরও এক সরকারি কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে।
জানা গিয়েছে, গত ২৫ জানুয়ারি সমাজ উন্নয়ন দপ্তরের উদ্যোগে গণবিবাহের আয়োজন করা হয়েছিল। যারা বিয়ে করবে তাদের সরকারের তরফে ৫১ হাজার টাকা দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। এই ঘোষণার পরই বিয়ের হিড়িক পড়ে যায়। বিয়ের জন্য ৫৬৮ জন যুগলের নাম নথিভুক্ত করা হয়েছিল। সরকারি টাকা পাওয়ার আশায় বিয়ের আসরে উপস্থিত ছিলেন কনেরা। কিন্তু আদৌ কারও বিয়ে হয়নি। ঘটনার ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই বির্তকের শুরু হয়। এই ঘটনায় সরকারি আধিকারিক সহ একাধিক মহিলার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। এদিকে গণবিবাহে দুর্নীতির একের পর এক তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে যোগী সরকার। ইতিমধ্যেই ১৭ বর কনেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রতিটি বিয়ে খতিয়ে দেখতে গঠন করা হয়েছে ৩ সদস্যের কমিটি। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেউ টাকা পাবে না।