পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: আজ বহু প্রতীক্ষিত হিজাব মামলার রায় ঘোষণা করার কথা ছিল সুপ্রিম কোর্টে। তবে শীর্ষ আদালতের দুই বিচারপতি একমত পোষণ না করায় মামলা গেল বৃহত্তর বেঞ্চে। তবে শেষ পর্যন্ত বিচারপতি হেমন্ত গুপ্ত এবং বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চ ‘খণ্ডিত রায়’ দিয়েছে। গত ১৫ মার্চ কর্নাটক হাই কোর্টের রায়ে বলা হয়েছিল, হিজাব পরাকে ধর্মাচরণের প্রয়োজনীয় অঙ্গ হিসেবে দেখা ঠিক নয়। বৃহস্পতিবারের খণ্ডিত রায়ের ফলে এ বার উচ্চতর বেঞ্চে গেল হিজাব মামলা। এবার এই মামলার শুনানি হবে তিন বিচারপতির বেঞ্চে। সেই বেঞ্চ সিদ্ধান্ত নেবে পরবর্তীতে ৯ বিচারপতি বেঞ্চে এই মামলা যাবে কিনা।
বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া বলেন, ‘হিজাব পরা নিজের পছন্দের বিষয়।’ বিচারপতির মতে, ধর্মাচরণ প্রত্যেকের নিজস্ব পছন্দের বিষয়। সংবিধানের ১৪ ও ১৯ নম্বর অনুচ্ছেদের কথা উল্লেখ করে বিচারপতি বলেন, হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত ভুল। ওই ছাত্রীদের পড়াশোনাটাই আমার কাছে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা কি তাদের সঠিক দিশা দেখাতে পারছি?
অন্যদিকে বিচারপতি হেমন্ত গুপ্তা বলেন, ‘আমার রায়ে ১১ টি প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে। আমি আবেদন খারিজ করার প্রস্তাব দিচ্ছি।’ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধ করার পক্ষেই রায় দেন তিনি।
উল্লেখ্য, কর্নাটক হাইকোর্টের রায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব পরা অপরিহার্য ধর্মীয় অনুশীলন নয় বলে উল্লেখ করা হয়। কেবল অপরিহার্য ধর্মীয় আচরণই সংবিধানের ২৫ নম্বর অনুচ্ছেদের অধীনে সুরক্ষা পেতে পারে।
আর, এই ইস্যুতেই কর্নাটক হাইকোর্ট মুসলিম শিক্ষার্থীদের ক্লাসে হিজাব পরার আবেদন খারিজ করে দেয়। কর্নাটক সরকার গত ৫ ফেব্রুয়ারি একটি নির্দেশনা জারি করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব পরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। তারপর থেকেই ওই রাজ্যে হিজাব ইস্যুতে বিক্ষোভ শুরু হয়। উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে স্কুল-কলেজ বন্ধও রাখতে বাধ্য হয় কর্নাটক সরকার। ওই মামলাতেই কর্নাটক হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করে যে হিজাব ইসলামে বাধ্যতামূলক নয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ড্রেস কোড থাকতেই পারে। হাইকোর্টের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় একাংশ পড়ুয়া।