পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ২০২৩ সালে তুরস্ক-সিরিয়ার অভিশপ্ত ভূমিকম্প কেড়ে নিয়েছিল ৫০ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ। আহত বহু। প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। এই অবস্থায় ধবংসস্তূপের নীচে আটকে পড়া মানুষের প্রাণের সন্ধানে উদ্ধারে নামে ওই দুজন। সেই দুজন সারমেয়কে আনা হয়েছে গার্ডেনরিচে। রোমিও ও জুলি গত তিন ধরে প্রাণের সন্ধান করে চলেছে গার্ডেনরিচের ধবংস্তূপে। তিনদিনে একাধিক প্রাণের হদিশ দিয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ওই দুই কুকুর।
রবিবার রাতে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে গার্ডেনরিচে। তাসের ঘরের মতো ঝুপড়ির উপর ভেঙে পড়ে নির্মীয়মাণ বহুতল। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ১০। আহতদের চিকিৎসা চলছে হাসপাতালে। এখনও পর্যন্ত ধবংসস্তূপের মধ্যে মানুষ আটকে আছে কিনা তার খোঁজ করে চলেছে সারমেয় রোমিও ও জুলি। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১০ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে ঘটনাস্থল থেকে। গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে একাধিক জনকে। ঘটনার পরেই সেখানে যায় কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। পৌঁছে যান জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরাও। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সঙ্গেই আনা হয় রোমিও ও জুলিকে।
আট বছর ধরে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) সেকেন্ড কমান্ডের সদস্য ল্যাব্রাডর প্রজাতির রোমিও ও জুলি। ধবংসাবশেষ থেকে প্রাণের সন্ধান করতে দক্ষ দুজনেই। সেইভাবে প্রশিক্ষিত তারা। তীক্ষ্ণ ও ক্ষুরধার পারদর্শিতা নিয়ে কোনও প্রাণের খোঁজ পেলেই তার সামনে গিয়ে মাটি
সে ভাবেই তাদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সারা বছর ধরে চলে সেই প্রশিক্ষণ। গার্ডেনরিচে কাজ করা এনডিআরএফের এক কর্মীর কথায়, ‘‘ধ্বংসস্তূপের ভিতরে কোনও প্রাণের খোঁজ পেলে সেখানে গিয়েই সামনের পা দিয়ে আঁচড়াতে থাকে ওরা। পাশে কোনও ফাঁকফোঁকর থাকলে সেখান দিয়ে ভিতরে ঢুকতে চায়। তা দেখে আমরা বুঝতে পারি।
জানা গেল, এনডিআরএফের সেকেন্ড কমান্ড বাহিনীর মূল কার্যালয় হরিণঘাটায়। সেখানেই আরও প্রশিক্ষিত কুকুরদের সঙ্গে রাখা হয় রোমিও ও জুলিকে। তবে গত তিন দিন ধরে গার্ডেনরিচে কাজের জন্য কৈখালির কার্যালয়ে তাদের রাখা হচ্ছে। সকালে বাকি কর্মীদের সঙ্গেই ওই দুই কুকুরকে আনা হচ্ছে। রাতে আবার দু’জনকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বাহিনীর কৈখালির কার্যালয়ে। টানা কয়েক ঘণ্টা কাজের পরে দু’জনকেই কিছুক্ষণ বিশ্রাম করছে।
গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে তুরস্কে যখন ভূমিকম্প হয়, তখন সে দেশে ভারত থেকে দু’টি
দলকে পাঠানো হয়েছিল বলে জানালেন এনডিআরএফের কর্মীরা। দিল্লি এবং কলকাতা থেকে সেই দু’টি দল যায়। কলকাতার দলের সঙ্গেই গিয়েছিল রোমিও ও জুলি। সেখানে গিয়ে উদ্ধারকাজে টানা ন’দিন থাকতে হয়েছিল। দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছিল ওরা।