আবদুল ওদুদ, কলকাতা: ‘লাব্বাইক আল্লা হুম্মা লাব্বাইক’ অর্থাৎ ‘ আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠল কলকাতা নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের পুরনো টার্মিনাল।
কালেমা ‘চিত সউদির বিশাল আকারের এসভি-৫৫৫১ বিমানে ৩৬৫ জন পুরুষ ও মহিলা কাবার পথে রওনা হলেন। আর সউদির বিমানের উঠলেন ‘লাব্বাইক আল্লা হুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনি দিতে দিতে।
শুক্রবার রাত ৩ টার পর থেকে নিউ টাউনের মদিনাতুল হুজ্জাজ এবং বিমান বন্দর এলাকায় একেবারে ভরপুর ছিল হজযাত্রীদের উপস্থিতিতে। যদিও এবছর বিমান বন্দরের হজযাত্রীদের কোনও আত্মীয় স্বজন যেতে পারেনি। সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকায়।
সকাল ৭ টার পর মদিনাতুল হুজ্জাজ থেকে হজযাত্রীরা সরকারি ব্যবস্থাপনায় শীততাপ নিয়ন্ত্রিত বাসে করে বিমান বন্দরের পৌঁছে দেওয়া হয় মদিনাতুল হুজ্জাজে ব্যবস্থাপনায় হাজির ছিলেন হজ কমিটির চেয়ারম্যান নাদিমুল হক, সংখ্যালঘু দফতরের সচিব গুলাম আলি আনসারি, বিশেষ সচিব সাকিল আহমেদ, ওয়াকফ বোর্ডের সিইও আহসান আলি, হজ কমিটির কার্যনির্বাহি আধিকারিক মুহাম্মদ নকি, বিধায়ক হাজি নুরুল, আমিরুল ইসলাম প্রমুখ।
করোনার পরিস্থিতির কারণে দু’বছর রাজ্য থেকে কোনও হজযাত্রী পবিত্র ভূমি মক্কায় যেতে পারেননি। কাজেই এবছর রাজ্যের হজযাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ছিল। তাঁদের প্রিয় মানুষকে ছাড়তে হাজির ছিলেন পরিবারের অনেক সদস্য।
শুক্রবার সকালে প্রথম উড়ানের হজ যাত্রীদের এবং তাঁদের আত্মীয়দের নিয়ে এক ভাব গম্ভীর পরিবেশ তৈরি হয়। প্রিয় মানুষের জন্য অনেককে চোখের জল ফেলতে দেখা যায়। হজ হাউসের বাইরে বেশ কয়েক জায়গায় আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে দোয়া করেন অনেক হজযাত্রী। অনেকেই প্রিয়জনকে দেখার জন্য ছোট বাচ্চাকেও নিয়ে এসেছেন।
সব কিছু মিলে নিউ টাউনের মদিনাতুল হুজ্জাজের শুক্রবারের সকাল ছিল এক করুণ এবং বেদনা ভরা পরিবেশ। শীতাতপ নিয়ন্ত্রত বাসে করে যান হজযাত্রীরা বেরিয়ে যাচ্ছেন পরিবারের আত্মীয় স্বজনরা হাত দেখাতে দেখাতে তাঁদের বিদায় জানাচ্ছেন।
রাজ্যসভার সাবেক সাংসদ এবং পুবের কলম পত্রিকার সম্পাদক আহমদ হাসান ইমরান হজযাত্রীদের শুভেচ্ছা জানাতে বিমান বন্দরের উপস্থিত ছিলেন। বহু হজযাত্রীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
উল্লেখ্য, এবছর রাজ্য থেকে ৯৪০০ হজযাত্রী পবিত্র হজ সম্পন্ন করতে যাবেন। তার মধ্যে পশ্চিম বাংলায় ৫২০৯, ত্রিপুরার ১০০, ঝাড়খণ্ডের ১৪৩৯, বিহারের ১৮৯০, মনিপুরের ২৯৩ এবং ওড়িশার ৩৮২ জন হজযাত্রী রয়েছেন।
মোট ২৯টি ফ্লাইটে এই সমস্ত হজযাত্রীরা হজ সম্পন্ন করতে যাবেন। ১ জুলাই পর্যন্ত হজের উড়ান চলবে।