পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ ভোটদানের পরিমাণ জনসমক্ষে প্রকাশ করার কোনও আইনি নির্দেশ নেই। বুধবার সুপ্রিমকোর্টে ভোটের হার নিয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার করা এক মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এইকথা জানায় নির্বাচন কমিশন। শুধু তাই নয় কোনও ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে কত ভোট পড়েছে, সেই সংখ্যা প্রকাশ করারও কোনও আইনি সংস্থা নেই।
প্রথম ও দ্বিতীয়দফার ভোটগ্রহণের পর কমিশন ভোটের হারের তথ্য প্রকাশ করতে দেরি করে। পাশাপাশি কমিশন চুড়ান্ত পরিসংখ্যানের সঙ্গে প্রাথমিক পরিসংখ্যানের পার্থক্য নিয়েও সরব হয় বিরোধী দলগুলি। এরপরেই প্রতিটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে কত ভোট পড়েছে, সেই সংক্রান্ত তথ্য সম্বলিত ফর্ম ১৭সি ভোট শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কমিশনের ওয়েবসাইটে আপলোড করার দাবি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে দ্বারস্থ হয়েছে অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রাটিক রিফর্ম বা এডিআর (ADR)। এই মামলায় গত ১৭ মে কমিশনকে নোটিস ইস্যু করে শীর্ষ আদালত। জানতে চাওয়া হয়, কেন নির্বাচন কমিশন ভোটার টার্নআউট বা কত ভোট পড়েছে, সেই তথ্য জানাতে পারছে না।
বুধবার কমিশনের তরফে ২২৫ পাতার হলফনামা দিয়ে জানানো হয়েছে, নির্বাচনী আইন অনুযায়ী ভোট গ্রহণের পর শুধুমাত্র প্রার্থী এবং তার এজেন্টকেই কত ভোট পড়েছে, সেই তথ্য সম্বলিত ফর্ম ১৭সি দেওয়ার আইনি বিধান রয়েছে।
পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন শীর্ষ আদালতে দাবি করেছে, এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা নির্বাচনের মাঝে সমস্যা তৈরির চেষ্টা করছে। নির্বাচন কমিশন স্বেচ্ছায় ভোটার টার্ন আউট বা ভোটের সংখ্যা অ্যাপ, ওয়েবসাইট ও বিভিন্ন প্রেস রিলিজের মাধ্যমে জানায়।
নির্বাচন কমিশনের তরফে হাজির আইনজীবী মনিন্দর সিং ও আইনজীবী অমিত শর্মা আরও জানিয়েছেন, ভোট গ্রহণের দিন নির্বাচন কমিশনের তরফে ২ ঘণ্টার ব্যবধানে প্রাপ্ত ভোটের তথ্য জানায়। নির্বাচনে স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্যই এই উদ্যোগ। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম, টিভি চ্যানেল তাদের নিজস্ব সমীক্ষা ও তথ্যের ভিত্তিতে প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা বা হার প্রকাশ করছে, যা অনেক সময় কমিশনের দেখানো সংখ্যার তুলনায় বেশি হয়।
গণনার আগে ফর্ম ১৭সিপ্রকাশ্যে চলে এলে অনেক তথ্য বিকৃত হওয়া এবং নির্বাচন প্রক্রিয়া ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে বলেই হলফনামায় জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
প্রসঙ্গত, এডিআরের অভিযোগ নির্বাচন কমিশন ভোটার টার্ন আউটের তথ্য সঠিকভাবে জানাচ্ছে না। প্রাথমিক সংখ্যার সঙ্গে পরে ভোটের হারে বিস্তর ফারাক দেখা যাচ্ছে। আদৌ ভোটের সঠিক তথ্য প্রকাশ হচ্ছে কি না এবং ইভিএম বদলে যাচ্ছে কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেই শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল ওই সংস্থা।
বুধবার নির্বাচন কমিশন হলফনামা দিতেই, এই অবস্থানের তীব্র বিরোধীতা করছে কংগ্রেস-সহ অন্য বিরোধী দলগুলি। এক্স হ্যান্ডেলে প্রবীণ আইনজীবী কপিল সিব্বল প্রশ্ন করেন, “যদি কত ভোট গণনা হয়েছে সেই তথ্য আপলোড করা যায়, তাহলে কত ভোট পড়েছে তা কেন আপলোড করা যাবে না?”