পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ফের জেগে উঠছে বিশ্বের ভয়ঙ্কর আগ্নেয়গিরি। ৩৮ বছর আগে ২৫ হাজার মানুষের প্রাণ নিয়েছিল এই আগ্নেয়গিরির গলিত লাভা। গিলে খেয়েছিল আস্ত গোটা একটি শহরকে। প্রকৃতির কোপে পড়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় কলম্বিয়ার নেভাদো দেল রুইজ সহ একাধিক গ্রাম। ফের সেই ধবংসের অশনিসংকেত!
বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর জানিয়েছে, আসন্ন অগ্ন্যুৎপাত বিশ্বে সবচেয়ে বড় আকার নিতে পারে। কমলা সতর্কতা জারির ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
কলম্বিয়ার রাষ্ট্রপতি গুস্তাভো পেট্রোও ট্যুইটারে একটি সতর্কতা জারি করে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় মেয়রদের প্রোটোকল প্রস্তুত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
আগ্নেয়গিরিটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় রিং অফ ফায়ারে অবস্থিত। বিপজ্জনক আগ্নেয়গিরিটি তার কার্যকলাপের জন্য কুখ্যাত। পশ্চিম কলম্বিয়ায় অবস্থিত একটি বিশাল ১৭,৪০০-ফুট উচ্চতায় (৫৩০০-মিটার) রয়েছে এই পর্বতীয় আগ্নেয়গিরি।
কলম্বিয়ার খনি মন্ত্রণালয় আগাম পূর্বাভাস হিসেবে কয়েকদিন বা সপ্তাহের মধ্যেই একটি নয়া অগ্ন্যুৎপাতের সতর্কতা জারি করেছে। বিপদের বার্তা পেয়েই মানুষকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
কলম্বিয়ান জিওলজিক্যাল সার্ভিস কর্তৃপক্ষ (এসজিসি), জনসাধারণকে শান্ত থেকে নির্দেশিকা অনুসরণ করার নির্দেশ দিয়েছে। ১৯৮৫ সালের ১৩ নভেম্বর শেষ অগ্ন্যুৎপাত হয়েছিল। যাকে ২০ শতকের সবচেয়ে মারাত্মক অগ্ন্যুৎপাত বলে চিহ্নিত করা হয়। এই অগ্ন্যুৎপাতকে কলম্বিয়ার ইতিহাসে প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলির মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বলে বিবেচনা করা হয়। আগ্নেয়গিরি থেকে নির্গত গলিত লাভা আরমেরো শহরটিকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়। শহরের ৫০, হাজার জনসংখ্যার মধ্যে মৃত্যু হয় অর্ধেকের।
উল্লেখ্য, প্যাসিফিক রিং অফ ফায়ার হল একটি অঞ্চল যা প্রশান্ত মহাসাগরকে ঘিরে রয়েছে, যেখানে প্রচুর পরিমাণে ভূমিকম্প এবং আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ঘটে। এই ভূতাত্ত্বিক কার্যকলাপের পিছনে পৃথিবীর পৃষ্ঠের নীচে টেকটোনিক প্লেটের চলাচলকেই দায়ী করা হয়। রিং অফ ফায়ারে ৪৫০টিরও বেশি আগ্নেয়গিরি রয়েছে এবং বিশ্বের সক্রিয় এবং সুপ্ত আগ্নেয়গিরির প্রায় ৭৫ শতাংশ এই অঞ্চলে অবস্থিত। প্যাসিফিক রিং অফ ফায়ারের আশেপাশের দেশগুলির প্রতি সরকার পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে, প্রয়োজনে সকলকে নিরাপদে সরানোর নির্দেশ জারি করা হতে পারে।