শুভজিৎ দেবনাথ,গয়েরকাটা: চাষের ক্ষেত থেকে মাথা তুলে একের পর এক জাম্প দিচ্ছে ট্রিংকেট প্রজাতির স্নেক ( সাপ), চাঞ্চল্য এলাকায়। বাংলায় যাকে পঙ্খিরাজ সাপ বলা হয়ে থাকে। মঙ্গলবার সাতসকালে ডুয়ার্সের পূর্ব গয়েরকাটার বাসিন্দা দীপু মন্ডলের চাষের জমি থেকে সাপটিকে উদ্ধার করা হয় ।
জানাগিয়েছে, অন্যান্য দিনের মতোই এদিন সকালে শ্রমিকরা চাষের জমিতে আলু গাছের পরিচর্যা করতে গেলে ক্ষেতের মাঝে জাম্প করতে দেখতে পায়। যার অর্ধেকটা অংশ সরু গর্তের মধ্যে । এরপর আতঙ্কে স্থানীয়দের খবর দিলে লোকজন এসে সাপটিকে দেখতে ভিড় জমায়। সাহস করে কাছে গেলে লক্ষ্য করা যায় সাপটির পেটের নিচে দু – জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
সর্প বিশেষজ্ঞদের মতে,একসময় ডুয়ার্সের বিভিন্ন এলাকায় এই সাপের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যেত প্রচন্ড পরিমাণে। বর্তমান সময়ে চাষের জমিতে রাসায়নিক সার প্রয়োগ তাদের বাসস্থান নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে এই সাপের অস্তিত্ব ধীরে ধীরে কমতে বসেছে। এদিন এই সাপ উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় রীতিমত চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
সাপটির শরীরের গঠন, অনেকটাই দেখতে খালি চোখে মনে হতে পারে হেলে ( ঘেন্টি) সাপ। লম্বায় প্রায় সাড়ে পাঁচ ফুট হয়ে থাকে। চোখের দু – পাশে কালো কাজলের ফোঁটার মত দাগ রয়েছে। মাথা থেকে বেশ খানিকটা অংশ চক্রা-বক্রা। কামড়ানোর সময় সমগ্র শরীরটিকে ভাঁজ করে জাম্ব করে আক্রমণ করে থাকে। শিকারকে ভয় দেখানোর জন্যে নিজের শরীরকে সেই ভাবে বিস্তার করে। যা অন্যান্য সাপের তুলনায় একদমই আলাদা। সাপটি বিষধর নয়,নির্বিষ। সাপটির কোমরের অংশে আঘাত লেগেছিলো। স্থানীয়রাই উদ্ধার করে প্লাস্টিকের কৌটোতে বন্দি করে সেটিকে মোরাঘাট রেঞ্জ অফিসের বন দফতরের কর্মীদের হাতে তুলে দেন।
সর্ব বিশারদ মিন্টু চৌধুরী বলেন,সাপটি বর্তমানে লুপ্তপ্রায় প্রজাতির। ডুয়ার্সে এক সময় পর্যন্ত পরিমাণে পাওয়া যেত। ইদানিং কালে সেভাবে আর লোকালয়ে দেখা যায় না। ইদুরের গর্ত ও গুদাম ঘরেই মূলত এরা থাকতে পছন্দ করে। খালি চোখে দেখতে অনেকটাই হেলে সাপের মত এটিও নির্বিষ প্রজাতির সাপ। চাষের জমিতে রাসায়নিক সার প্রয়োগ করার ফলে বাসস্থান নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে এদের আজ অস্তিত্ব সংকটে। চিকিৎসার পর সাপটিকে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে বলেই মোরাঘাট রেঞ্জ অফিস সূত্রে জানানো হয়েছে।