পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে ভোটদানের চুড়ান্ত পরিসংখ্যান প্রকাশ করার নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত। কমিশন প্রথম দু’দফার ভোটের যে হার প্রকাশ করেছে তা নিয়ে সন্দেশ প্রকাশ করেছিল বিরোধীদলগুলি। নির্বাচনী জনসভা থেকে কমিশনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার ওই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনকে ভোটের হার প্রকাশের ক্ষেত্রে সময়সীমা বেঁধে দিল। এ দিন আদালত জানিয়েছে, আগামী চারদফা ভোটের ক্ষেত্রে নির্বাচন শেষের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রদত্ত চূড়ান্ত ভোটের হার জানাতে হবে কমিশনকে।
সুপ্রিম কোর্টের কাছে অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (এডিআর) নামে একটি সংগঠন আবেদন করে, নির্বাচন কমিশনকে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার দু’দিনের মধ্যে ভোটকেন্দ্রের ফর্ম ১৭সি পার্ট-১ অর্থাৎ বুথের ভোটার অ্য়াকাউন্ট প্রকাশ করতে হবে তাদের ওয়েবসাইটে। আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণের দায়ের করা আবেদনে জানানো হয়েছে, চূড়ান্ত ভোটারের ভোটদানের তথ্য প্রকাশে অত্যধিক দেরি করছে কমিশন ৷ ৩০ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন তাদের প্রেস বিবৃতিতে চূড়ান্ত ভোটদানের যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে তাতে প্রাথমিক পরিসংখ্যানের তুলনায় ভোটের হারের শতাংশ অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে তথ্যের সত্যতা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে ৷ যা নিয়ে জনসাধারণের মনেও সন্দেহের জন্ম দিয়েছে।
আবেদনে আরও বলা হয়েছে, ৩০ এপ্রিল প্রেস রিলিজে প্রকাশিত তথ্য (প্রথম দফায় ভোটারদের ভোটদানের হার – ৬৬.১৪ শতাংশ এবং দ্বিতীয় দফায়- ৬৬.৭১ শতাংশ) যা যথাক্রমে ১৯ এপ্রিল এবং ২৬ এপ্রিলের প্রাথমিক তথ্যের সঙ্গে তুলনা করলে তা প্রায় ৬ শতাংশ (৫.৭৫%) বৃদ্ধি পেয়েছে।
আবেদনে জোর দিয়ে বলা হয়েছে যে, ভোটারের ভোটদানের তথ্যের সম্পূর্ণ সংখ্যা ছাড়া আম জনতা ফলাফলে ঘোষিত ভোটের সংখ্যার সঙ্গে প্রাথমিক ভোটের সংখ্যার তুলনা করতে পারেন না ৷ তাই, ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে বুথের ভোটার অ্য়াকাউন্ট প্রকাশ করা জরুরি ৷ এ দিকে শুক্রবারই এই একই ইস্যুতে নির্বাচন কমিশনে যায় তৃণমূল-সহ বিরোধীদের একটি প্রতিনিধি দল। তারা ভোটের হারের পরিসংখ্যান নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। প্রতিনিধি দলে ছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন, কংগ্রেসের অভিষেক মনু সিংভি, ঝাড়খণ্ড মুক্তিমোর্চার সাংসদ মহুয়া মাজি প্রমুখ।
সাধারণত ভোটের দিন বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত কোথায় কত ভোট পড়ল তা নির্বাচনের দিনই প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। পরে চূড়ান্ত ভোটের হার জানানো হয়। তৃণমূল নেত্রী-সহ বিরোধী দলের নেতাদের অভিযোগ, বিকেল পাঁচটার পর ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে যাঁরা ভোটের লাইনে থাকেন, সেই সংখ্যাটাই পরে চূড়ান্ত তালিকার সঙ্গে যুক্ত হয়। কিন্তু কোনওভাবেই ওই ভোটের হার শতকরা ৫ থেকে ৭ শতাংশ হওয়া সম্ভব নয়। বিরোধীদের আরও অভিযোগ, যেখানে বিজেপির কম ভোট পোল হয়েছিল, হঠাৎ করে কমিশন নোটিস জারি করে সেখানে ভোট বাড়িয়ে দিয়েছে।