পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ বিতর্কিত পেগাসাস সফটওয়্যারের নজরদারি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে যে মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে, প্রযুক্তিবিদদের দিয়ে তার তদন্ত করাতে সুপ্রিম কোর্ট এক বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করবে। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানা এই কথা জানিয়ে দেন। এদিন এই মামলার শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টে। শুনানির সময়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, এই কমিটি গড়ার কথা মাথায় থাকলেও কিছু প্রযুক্তিবিদ এই কমিটিতে থাকতে অনীহা প্রকাশ করায় কমিটি গড়তে দেরি হচ্ছে। সামনের সপ্তাহে আমরা ইচ্ছুক প্রযুক্তিবিদদের পেয়ে যাব এবং কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করে দেব। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ইজরায়েলি সফটওয়্যার ব্যবহার করে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ ও যুবনেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ বেশ কিছু দেশনেতা– আমলা– কেন্দ্রীয় মন্ত্রী– সচিব– সাংবাদিক– শিল্পপতির ফোনে নজরদারির যে মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে সেই প্রশ্নে নিরপেক্ষ তদন্তের আর্জি জানিয়ে শীর্ষ কোর্টে এক আবেদন পেশ হয়েছে। সেই প্রসঙ্গেও দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে এদিন জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
যে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে এই নজরদারির অভিযোগ উঠেছে তারাই বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ে তদন্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। সেই তদন্ত যে কীরকম হবে, তা বলা বাহুল্য। তাই সুপ্রিম কোর্ট তাতে আমল না দিয়ে নিজেরাই বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ার ঠিক করেছে। বরং সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রকে স্পষ্ট করে জানিয়েছে, কেন্দ্র জানাক যে সব ব্যক্তির ফোনে নজরদারির অভিযোগ উঠেছে তা পেগাসাস ব্যবহার করে করা হয়েছিল কী? করা হলে তা আইন মেনে করা হয়েছিল কী? এর আগে সুপ্রিম কোর্ট এই ব্যাপারে কেন্দ্রকে হলফনামা দিতে বলে। তখন কেন্দ্র দেশের নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলে এড়িয়ে যায়। সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য এই নিয়ে জোড়াজুড়ি করেনি কেন্দ্রের উপর।
এক আন্তজার্তিক সংবাদসংস্থার প্রকাশিত খবরে জানা গিয়েছে, কেন্দ্র পেগাসাস সফটওয়্যার ব্যবহার করে অন্তত ৩০০ জন নামী ব্যক্তির ফোনে নজরদারি চালাচ্ছে। এই নিয়ে বিরোধী দলগুলি সংসদে তুলকালাম করলেও কেন্দ্রের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও জবাব দেওয়া হয়নি। সুপ্রিম কোর্ট আগে বলেছিল, কেন্দ্র হলফনামা দিলে কোনও তদন্ত কমিটি গড়ার দরকার হবে না। কিন্তু কেন্দ্র জাতীয় নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে হলফনামা দিতে অস্বীকার করায় সুপ্রিম কোর্ট এখন বিশেষজ্ঞ কমিটির দিকে এগোচ্ছে। এদিন কেন্দ্রের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, ‘কী সফটওয়ার ব্যবহার করা হয়েছে তা সকলের জানার বিষয় নয়। বরং নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ে তদন্ত হতেই পারে’।
এখন বোঝা যাচ্ছে, কমিটিতে কোন বিশেষজ্ঞরা থাকবেন, তার উপরই তদন্তের গতিপ্রকৃতি নির্ভর করবে। পেটোয়া বিশেষজ্ঞরা থাকলে তদন্ত সরকারের পক্ষে যাবে।