পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: অত্যাচারিত, নির্যাতিতা এই শব্দগুলি হামেশাই শোনা যায়। কিন্তু সেই অত্যাচারের কাহিনি শোনা গিয়েছিল কেতুগ্রামেও। তবে নির্যাতনের পরেই শুরু এক ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই। কাহিনির শিরোনামে মর্মান্তিক কাহিনির নেপথ্যে জন্ম নিল এক অনুপ্রেরণার গল্প। নিজের জীবনের নয়া অধ্যায় শুরু করলেন কেতুগ্রামের নার্স রেণু খাতুন। যার স্বামী শুধুমাত্র সন্দেহের বশে স্ত্রী যাতে সরকারি চাকরি করতে না পারে তার জন্য ধারালো অস্ত্র দিয়ে ডান হাত কবজি থেকে কাটতে দ্বিধা করেনি। কিন্তু স্বামী অত্যাচারে জর্জরিত রেণু থেমে থাকলেন না। হাসপাতালের বিছানা থেকে শুরু করলেন ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই। সেই সঙ্গে তার বার্তা নির্যাতনের ঘটনায় মেয়েরা যেন সব কিছু সহ্য করে চুপ করে বসে না থাকে। লড়াই যেন তারা চালিয়ে যায়।
দুর্গাপুরের একটি হাসপাতালে নার্সের কাজ করতেন রেণু খাতুন। সঙ্গে থাকতেন তার স্বামী শের মহম্মদ। বরাবরই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন রেণু। তাই সরকারি চাকরির পরীক্ষার দেওয়া শুরু করেন। সরকারি চাকরি পেয়েও যান রেণু। শুধু অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার আসার দেরি ছিল। কিন্তু তার আগেই রেণুর সঙ্গে ঘটে এক নারকীয় ঘটনা। রেণুর স্বামী শের মহম্মদকে তার বন্ধুরা বোঝায় সরকারি চাকরি পেয়ে আর তার সঙ্গে থাকবে না রেণু। এর পরেই বন্ধুদের যোগসাজশে এক রাতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ডানহাতে কবজি থেকে রেণুর হাত কেটে দেয় শের মহম্মদ। হাসপাতালে শুরু হয় রেণুর চিকিৎসা। ঘটনার পরেই এলাকা ছাড়া হয় শের মহম্মদ সহ তার বাড়ির লোকেরা। পুলিশ পরে শের মহম্মদ, শ্বশুর শাশুড়ি-সহ ৬ জনকে গ্রেফতার করে।
তবে এই অবস্থায় থেমে থাকেননি রেণু। হাসপাতাল থেকেই বাঁ হাতে লেখা অভ্যাস করতে শুরু করেন। খবর শুনে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেণুর কাটা হাতে কৃত্রিম হাত বসানোর আশ্বাস দিয়েছেন। 8 দিন ধরে দুর্গাপুরের বেসরকারি হাসপাতালে লড়াই করার পর এখন সুস্থ রেণু। এই লড়াইয়ে তাঁর পাশে থাকার জন্য রাজ্য সরকার ও চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রেণু খাতুন শারীরিকভাবে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তাঁর ডান হাতের কবজি কেটে গেলেও কৃত্রিম হাত বসানো নিয়ে চিকিৎসা চলছে। তবে শ্বশুরবাড়িতে ফিরতে চায় না কেতুগ্রামের রেণু খাতুন।