পুবের কলম প্রতিবেদক: কলকাতায় ফের ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ১৪ বছরের এক কিশোরীর। মৃতার নাম ভার্গভী মণ্ডল। হালতুর ১০৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছিল ওই কিশোরী। এমআর বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি ছিল ওই কিশোরী। জ্বর-শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিল ভার্গভী মণ্ডল।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ডেঙ্গি শক সিন্ড্রোমেই বৃহস্পতিবার সকালে ওই কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। প্রসঙ্গত, কলকাতার ১০৫ ও ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গু পরিস্থিতি যথেষ্ট উদ্বেগজনক।
এদিকে বৃহস্পতিবার ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গু সচেতনতার প্রচারে যান মেয়র ফিরহাদ হাকিম। ১০৫ ও ১০৬ নম্বর ওয়ার্ড যে ক্রমই ডেঙ্গু প্রবন অঞ্চল হয়ে উঠছে তা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন খোদ মেয়রও।
বৃহস্পতিবারও ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে খালি জায়গায় আবর্জনা পরে থাকতে দেখা যায়। সেই জমির মালিককে নোটিশ ধরানোর নির্দেশ দেন মেয়র। একইসঙ্গে জমির মালিকের বিরুদ্ধে কেস করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘সচেতনতা বাড়াতে কড়া পদক্ষেপ নিতেই হচ্ছে। এই বেল্টটা খুব ভয়াবহ হয়েছে। মানুষের সমর্থন চাই এই ডেঙ্গু তাড়াতে। সকলের পাশে দাঁড়ানো দরকার।’
ওদিকে, হুগলির উত্তরপাড়ায় ফের ডেঙ্গুতে প্রাণ হারিয়েছেন এক প্রৌঢ়। ডেঙ্গিতে প্রাণ হারিয়েছেন উত্তরপাড়া পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের ভদ্রকালীর বাসিন্দা স্বপন ঘোষ। তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, জ্বর হয়েছিল স্বপন ঘোষের। স্থানীয় চিকিৎসককে দেখানো হয়। কিন্তু জ্বর না কমায় ৪ নভেম্বর উত্তরপাড়ার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে তাঁকে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে ৭ তারিখ স্বপন ঘোষকে কলকাতার সিএমআরআই-তে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শারীরিক অবস্থার কোনও উন্নতি ঘটেনি। আইসিইউ থেকে ভেন্টিলেশনে চলে যান প্রৌঢ়। এরপরই বুধবার সন্ধায় মৃত্যু হয় স্বপন ঘোষের।
ওদিকে বুধবার সকালে ডেঙ্গিতে প্রাণ হারায় ৯ বছরের এক শিশু। জিসান রাজা নামে ওই শিশুটি তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র ছিল। হাওড়া পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের পিলখানা সেকেন্ড বাই লেনের বাসিন্দা ছিল জিসান রাজা। ৩ নভেম্বর জিসানের জ্বর আসে। রক্ত পরীক্ষার পর জানা যায় যে, জিসান ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। সঙ্গে সঙ্গেই ছোট্ট জিসানকে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু তার প্লেটলেট নামতে থাকে হু হু করে। শেষে শক সিন্ড্রোমে তার মৃত্যু হয়।
রাজ্যে স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, রাজ্যের ৬টি জেলায় মূলত ডেঙ্গি পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। কলকাতা ছাড়াও যে তালিকায় রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, মুর্শিদাবাদ ও জলপাইগুড়ি।
সবেচেয়ে উদ্বেগজনক হল, গোটা রাজ্যের তুলনায় কলকাতায় ডেঙ্গু পজিটিভিটির হার দ্বিগুণ। অন্য দিকে মুর্শিদাবাদ জেলাতেই বিপুল হারে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। লালগোলা ব্লকে সব থেকে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি যদিও প্রশাসন সচেতনতা বাড়তে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে।