রেজাউল করিম: রাজ্য মেধা তালিকায় ষষ্ঠ স্থান দখল করে নজির তৈরি করেছে কালিয়াচকের মুহাম্মদ সাহাবুদ্দিন আলি। সে পেয়েছে ৬৮৮ অর্থাৎ ৯৮.২৯ শতাংশ। তার ফলাফলে খুশি নিজের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান টার্গেট পয়েন্টের শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে আত্মীয়-স্বজনেরা। নিতান্তই গরিব পরিবারের ছেলে সে। বাবা চাষাবাদ করে সংসার চালান। সেই পরিবারের ছেলে হয়ে মাধ্যমিকে এত ভাল ফল করায় এলাকায় রীতিমতো নজর কেড়েছে সে।
তার বাবা সাইফুদ্দিন আহম্মেদ পেশায় একজন ক্ষুদ্র চাষি। মা শিউলি খাতুন বিড়ি বাঁধাইয়ের কাজ করে সংসারে সাহায্য করেন। মাত্র ২ বিঘা জমি রয়েছে তাঁদের। সেই জমিতে এই দুর্মূল্য বাজারে চাষাবাদ করে যা আয় হয়, তাতেই চলে সংসার। কালিয়াচক-৩ ব্লকের ভগবানপুরের এলাহিটোলা গ্রামে বাড়ি সাহাবুদ্দিনের। সে ক্লাস সিক্স থেকে টার্গেট পয়েন্ট মিশনে পড়াশোনা করলেও মোজমপুর সুভানি বিশ্বাস হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে সে।
পরীক্ষা সেন্টার হয়েছিল কালিয়াচক হাইস্কুলে। ভবিষ্যতে সাহাবুদ্দিন আইআইটি-তে পড়তে চায়। পড়াশোনা তার ধ্যান-জ্ঞান। সাহাবুদ্দিন ২ বোন ও ১ ভাই। বড় মেয়ে সাজেদা খাতুন টার্গেট পয়েন্ট থেকে সাফল্যের সঙ্গে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে নিট প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। সাহাবুদ্দিনের মোট প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৮। সে পেয়েছে বাংলায়-৯৮, ইংরেজী-৯৫, অঙ্ক-১০০, ভৌত বিজ্ঞান-৯৭, জীবন বিজ্ঞান-১০০, ইতিহাস-৯৮ এবং ভূগোলে ১০০।
তার বাবা সাইফুদ্দিন আহমেদ জানান, ‘আমার এই সীমিত আর্থিক ক্ষমতার মধ্যে কয়েক বিঘা জমির ওপর নির্ভর করে ছেলেকে পড়াচ্ছি আমি। আমার স্ত্রী বিড়ি বাঁধাইয়ের কাজ করে সংসার চালানোর চেষ্টা করে। ছেলে এত ভাল ফলাফল করবে, ভাবতেই পারি নি। কিন্তু উচ্চ শিক্ষার জন্য আরও অর্থের প্রয়োজন। কী করে সেই টাকা জোগাড় হবে দুশ্চিন্তা হচ্ছে।’ছেলে সাহাবুদ্দিন জানায়, ‘মাধ্যমিকে যেরকম চেয়েছিলাম, তেমনই ফলাফল হয়েছে। কিন্তু মেধা তালিকায় জায়গা পাব, কোনও দিন ভাবি না। খুব ভাল লাগছে। এরপর দায়িত্ব অনেক বেড়ে গেল।’