পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: রাাষ্ট্রনায়কের হাত ধরে দেশে যেদিন রামরাজ্য প্রতিষ্ঠার সূচনা হল! তার একদিন পরেই দেশের আরেক প্রান্তে দ্বাদশ শ্রেণির দলিত পড়ুয়াকে মারধর করে জোর জবরদস্তি জয় শ্রীরাম বলতে বাধ্য করে গেরুয়া বসনধারী কয়েকজন রামভক্ত। ঘটনাটি ঘটেছে কর্নাটকের বিদার জেলার হুমনাবাদের একটি হনুমান মন্দিরে। ঘটনার পর হুমনাবাদ থানায় অভিযোগ দায়ের করে নির্যাতিত ওই দলিত ছাত্র।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হুমনাবাদের পিইউ কলেজের পড়ুয়া বছর সতেরোর ওই দলিত পড়ুয়া কয়েকদিন আগে তার হোয়াটসঅ্যাপ স্ট্যাটাসে ডা. বি আর আম্বেদকর, রাম এবং হনুমানের ছবি পোস্ট করেছিল।
ওই দলিত যুবক পুলিশের কাছে তার অভিযোগে বলেছে, ‘আমি যখন কলেজ থেকে ফিরছিলাম, হঠাৎ কয়েকজন যুবক রাস্তা আগলে দাঁড়ায়। ওরা আমাকে বলে, রাম ও হনুমানের অপমান করার জন্য স্ট্যাটাস দিয়েছিস। আমার কোনও কথা শুনতে চায়নি ওরা। আমাকে চ্যাংদোলা করে একটি অটোরিকশায় তুলে কুল্লুর ব্রিজের পাশে একটি হনুমান মন্দিরে নিয়ে যায়। এরপর ওরা মারধর করে আমাকে জয় শ্রীরাম বলতে বাধ্য করে। এবং আমাকে বলে ক্ষমা চাইতে হবে।’
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধি (আইপিসি)-র বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসবের পাশাপাশি তফসিলি জাতি এবং উপজাতি (অত্যাচার প্রতিরোধ) আইনে ১৯৮-এর প্রাসঙ্গিক ধারাগুলিও যোগ করা হয়েছে।
অযোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধনের দিন রাতে কর্নাটকের বেশ কয়েকটি এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল। কালাবুর্গী জেলার ভাদি শহরে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে পাথর ছোড়া এবং সংঘর্ষের অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনার পর এলাকায় ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এর একদিন পরই বিদারে এক দলিত ছাত্রের সঙ্গে এই ঘটনা ঘটে।
২২ জানুয়ারি আরও একটি ঘটনা অস্বস্তিকর ঘটনা ঘটে গুলবার্গা জেলার কোটনুর গ্রামের। সেখানে ডা. ভীম রাও আম্বেদকরের মূর্তিতে জুতোর মালা পরানোর মতো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। এর জেরে অনেক দলিত সংগঠন তীব্র বিক্ষোভ দেখান। কালাবুর্গির ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ (আইন শৃঙ্খলা) কণিকা সিক্রিওয়াল বিক্ষোভকারীদের শান্ত করতে এলাকা পরিদর্শন করে এবং বিআর আম্বেদকরের মূর্তিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেছিলেন।