আবদুল ওদুদ: নতুন বছরের শুরুতেই গঙ্গাসাগর মেলা। মেলা খতিয়ে দেখতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেলা উপলক্ষে প্রতিটি দফতর ধরে সমস্ত ব্যবস্থা পর্যালোচনা করেন তিনি। পুণ্যার্থীদের সুবিধার্থে অতিরিক্ত ট্রেন-বাস চালানো থেকে শুরু করে অতিরিক্ত লঞ্চের ব্যবস্থা সহ নিরাপত্তার সব দিক খতিয়ে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ১২ জানুয়ারি থেকে শুরু গঙ্গাসাগর মেলা। পুণ্যার্থীরা আসতে শুরু করবেন ৮ জানুয়ারি থেকে। মেলা চলবে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। এই মেলা নিয়ে যাতে কোনও রকম বিশৃঙ্খলা বা আইন-শৃঙ্খলার অবনতি না হয় তার জন্য প্রশাসনের শীর্ষ অফিসারা নজরদারি করবেন। বুধবার নবান্নে গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এই নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, মেলায় যাতায়াতের জন্য পূর্ব-রেল শিয়ালদহ থেকে ৬৬টি অতিরিক্ত ট্রেন চালাবে। প্রতিদিন ১৬ থেকে ১৭টি অতিরিক্ত ট্রেন চলবে ক্যানিং, নামখানা, কাকদ্বীপ শাখায়। এ দিনের বৈঠকের মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন যাতায়াতের জন্য প্রয়োজনীয় বাস রাখতে। ২২৫০টি অতিরিক্ত বাস তীর্থযাত্রীদের জন্য রাখা হবে। সার্বিক নিরাপত্তার কথা ভেবে মেলা প্রাঙ্গণে থাকবে ১১৫০টি ক্লোজ সার্কিট টিভি। তিরিশটি অ্যালার্ম বাটন থাকবে মেলার বিভিন্ন প্রান্তে।
বিপদ হলে যাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায় সেই জন্যই এই আয়োজন। অগ্নি নিরাপত্তার কথা ভেবে ৫০টি ফায়ার ব্রিগেডের গাড়ি মোতায়েন থাকবে। এ ছাড়া, পুণ্যার্থীদের যাতায়াতের জন্য ৩২টা ভেসেল, ১০০ লঞ্চ থাকবে যাতায়াতের জন্য। গঙ্গাসাগরে আসা মানুষের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে সাতটি অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে। যেখানে থাকছে ৩০০টি বেড।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য এবার থাকছে ১০ হাজার বড় টয়লেট। থাকবে ৭০০ ওয়াশরুম। পানীয় জলের জন্য ছোট ছোট সাত লক্ষ পাউচ রাখা থাকবে মেলা প্রাঙ্গণে। ২৮টি জায়গায় ফার্স্ট এইড সার্ভিস রাখা হবে। বারোটি জায়গায় মেডিক্যাল টিম থাকবে ও ১০০টি অ্যাম্বুলেন্স থাকবে পরিষেবার জন্য। রাখা হচ্ছে তিনটি ওয়াটার অ্যাম্বুলেন্স। থাকবে একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সও।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ ভিআইপিরা পাইলট কার্ড নিয়ে মেলা প্রাঙ্গণে ঢুকতে পারবে না। বাংলা-সহ আটটি ভাষায় তীর্থযাত্রীদের জন্য মাইকিং করা হবে। সব বাসে একজন করে সাগর বন্ধু ভলান্টিয়ার থাকবে, যারা তীর্থযাত্রীদের সহায়তা করবে। কিউ আর কোড এবং জিপিআরএস সিস্টেম চালু থাকবে। এই প্রথমবার মেলা প্রাঙ্গণে কিউআর কোড চালু হচ্ছে।
এই কিউ আর কোড স্ক্যান করে দেখে নেওয়া যাবে মেলায় কোথায় কি রয়েছে। এ ছাড়া, তীর্থযাত্রী ও সংবাদমাধ্যমের জন্য দেওয়া হবে ৫ লক্ষ টাকার বিমা। মেলা প্রাঙ্গণে নিরাপত্তার জন্য কুড়িটা ড্রোনের মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় নজরদারি করা হবে। ইসরোর সাহায্যে এই প্রথম স্যাটেলাইট ট্র্যাকিং সিস্টেম চালু করা হবে।