পারিজাত মোল্লা: রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ইউটিউব – অনলাইন পোর্টালের বিরুদ্ধে পুলিশের স্বতঃস্ফূর্ত মামলা করার নজির রয়েছে। যারা পুলিশের অতি সক্রিয়তার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে এসেছেন, তাদের বেশিরভাগই আইনি স্বস্তি পেয়েছেন। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত এর এজলাসে উঠে এক ইউটিউবারের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার অভিযোগ সংক্রান্ত মামলা।
এদিন ভুল ধারায় মামলা রুজু করার জন্য তদন্তকারী অফিসারকে তীব্র ভর্ত্সনার পাশাপাশি এজলাসে দাঁড় করিয়েই তাঁকে দিয়ে জোরে জোরে আইনের ধারা পড়ালেন খোদ বিচারপতি! এইরকম নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী থাকল কলকাতা হাইকোর্টের
বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর এজলাস।পুলিশের রুজু করা এফআইআরের বিরুদ্ধে মামলাকারীকে লিখিত অভিযোগ জানানোরও নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ।
আদালত সূত্রে প্রকাশ , উত্তর ২৪ পরগণার একটি ইউটিউব চ্যানেলের সঞ্চালকের বিরুদ্ধে পরিবেশনায় উসকানিমূলক শব্দ ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছিল। ‘সঞ্চালনায় ‘জল্লাদ’ শব্দ ব্যবহার করে তিনি ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করেছেন’, এই অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয় সন্দেশখালি থানায়। এফআইআরে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মানহানি বা সম্প্রীতি নষ্টের অভিযোগও আনা হয়। পুলিশের দায়ের করা এফআইআরকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে।এই মামলার শুনানিতে বৃহস্পতিবার কলকাতা
হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত বলেন, ‘জল্লাদ’ শব্দ প্রয়োগের জন্য সম্প্রীতি নষ্ট বা ধর্মীয় ক্ষেত্রে উসকানির মতো ধারায় কাউকে অভিযুক্ত করার কথা আইনে বলা নেই। এরপরই সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্তকারী অফিসারকে এদিন এজলাসে দাঁড় করিয়ে জোরে জোরে আইনের ধারা পড়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি।এইসব দেখে এজলাসেই আইনজীবীদের মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়ে যায়।
ঠাট্টার সুরে আইনজীবীরা বলতে থাকেন, ‘তদন্তকারী অফিসারের আইনের ‘ক্লাস’ নিচ্ছেন বিচারপতি!’একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সঞ্চালকের আইনজীবীকে পুলিশের এফআইআরের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোর নির্দেশ দেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত । আগামী ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওই সঞ্চালকের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিতে পারবে না বলেও এদিন জানিয়েছে আদালত।এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর রয়েছে বলে জানা গেছে।