পারিজাত মোল্লা: শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্যের সিঙ্গেল বেঞ্চে উঠে শিশু সুরক্ষা কমিশনের নোটিশ সংক্রান্ত মামলা।
এদিন হাইকোর্টের তরফে বিরোধী দল নেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে ওই নোটিশের উপর অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছে। তিন সপ্তাহের পর এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে । রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর করা একটি টুইট নিয়ে মামলা চলছে কলকাতা হাইকোর্টে। সেই টুইটে ‘কয়লা ভাইপো’ বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে? তা গত বুধবারই সে কথা জানতে চেয়েছিলেন বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য। বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি শেষ হয়েছে।
ওইদিনও বিচারপতি মামলার শুনানি পর্বে বলেন, কয়লা ভাইপো কে, সত্যি বুঝতে পারছি না’। এই মামলার বিষয় কতটা গুরুত্বপূর্ণ?সেটাও ওইদিন বুঝতে চেয়েছিলেন বিচারপতি। বিরোধী দলনেতার এই টুইটে শিশুর অধিকার আদৌ ক্ষুণ্ণ হয়েছে কি না? সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি। গত বছরের ১৩ নভেম্বর একটি টুইট করেন বিরোধী দলনেতা। তার প্রেক্ষিতে রাজ্যের শিশু অধিকার রক্ষা কমিশনে অভিযোগ জানান শিল্পা দাস নামে এক মহিলা। তারপরই শো-কজ নোটিস পাঠানো হয় শুভেন্দুকে। কমিশনের সেই নোটিস খারিজের আবেদন জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন শুভেন্দু।
বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য গত বৃহস্পতিবার জানতে চেয়েছিলেন, -‘ কীভাবে শিশুর অধিকার এ ক্ষেত্রে লঙ্ঘন হচ্ছে? শিশু সুরক্ষা কমিশনের তরফ থেকে ওইদিন জানানো হয়েছে, তারা প্রাথমিক তদন্ত করে শোকজ নোটিস দিয়েছিলেন। তাদের দাবি, -‘প্রাথমিক তদন্তে বোঝা গিয়েছে, কোনও একজন ব্যক্তিকে আক্রমণ করেই মন্তব্যটি করা হয়েছে, যার শিশুপুত্রের জন্মদিন আছে’। কমিশন আরও উল্লেখ করেছে, -‘প্রতি মানুষের একটা ব্যক্তিগত পরিসর আছে।
এ ক্ষেত্রে সেটা নষ্ট হচ্ছে। তাঁর পরিচয় গোপন থাকছে না, তাদের তরফ থেকে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি’ অভিযোগকারিণীর আইনজীবীকে বিচারপতি গত বৃহস্পতিবার প্রশ্ন করেন, -‘এটা কি সিরিয়াস কেস? একজন শিশুর অধিকার খর্ব করার মতো ততটা কী সিরিয়াস?’
অভিযোগকারিণীর আইনজীবী আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘শিশুর পরিচয় প্রকাশ হতে পারে। তাকে কৌতুক করা হতে পারে’।
বিচারপতি আরও ওইদিন বলেন, ‘সত্যি বুঝতে পারছি না কয়লা ভাইপো কী?’
শুভেন্দুর আইনজীবী সৌম্য মজুমদার ওইদিন কমিশনের বিপক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে বলেন, ‘কমিশনকে কোনও কাজ করতে দেখা যায় না। কারও নাম না বললে কীভাবে কমিশন অভিযোগ নিতে পারে?’ সেই প্রশ্নও তুলেছেন শুভেন্দুর আইনজীবী।
শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্যের সিঙ্গেল বেঞ্চে এই নোটিশে স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছে। তিন সপ্তাহের পর এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে।