পুবের কলম প্রতিবেদনঃ তৃণমূলের তরফ থেকে বারবার বলা হচ্ছিল ত্রিপুরায় বিপ্লব দেবের সরকার সংখ্যালঘু। তৃণমূল কংগ্রেস চাইলেই সেখানে এই সরকারকে ভেঙে দিতে পারে। কিন্তু বাংলার শাসক দল সেই পথে হাঁটতে চাইছে না। বরং তারা জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকারকে পুরো সময় ক্ষমতায় থাকার সুযোগ দিতে চায়। তখন থেকেই একটা জল্পনা চলছিল তবে কি বিজেপি ভেঙে তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন বেশ কয়েক জন বিজেপি বিধায়ক। তখন কুণাল ঘোষ, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ব্রাত্য বসু বা মলয় ঘটকেরা জবাব না দিলেও তৃণমূল সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে ত্রিপুরার বিজেপি আড়াআড়িভাবে বিভাজিত। শুধু তাই নয়। এই ভাঙন এতটাই প্রবল যে ত্রিপুরা ছেড়ে কলকাতায় এসে পাড়ি জমিয়েছেন বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট বিজেপি নেতা। কাজেই তৃণমূল কংগ্রেস চাইলে এই মুহূর্তে সে রাজ্যে বিজেপিকে সংখ্যালঘু সরকারে পরিবর্তিত করতে পারে।
আসলে এই মুহূর্তে ত্রিপুরা বিজেপির অন্দরে বিপ্লব দেবের বিরুদ্ধে একটা বিদ্রোহের আবহ তৈরি হয়েছে। আর সেই বিদ্রোহী বিধায়কদের একটা বড় অংশ যোগাযোগ রাখছে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে। তবে খাতায়-কলমে এই সংখ্যাটা কত এখনই প্রকাশ্যে আনতে চাইছে না তৃণমূল কংগ্রেস। বরং সে ক্ষেত্রে নীরবেই ঘর গোছানোর পক্ষপাতি তৃণমূল।
এদিন এই বিষয়টি নিয়ে ত্রিপুরায় তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি আশিস লাল সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, শুধু রাজ্যের মানুষের কাছে বিপ্লব দেব সরকার জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে ভাবলে ভুল হবে। বিপ্লব দেবের একনায়কত্বের বিরুদ্ধে দলের অন্দরেই একটা বিদ্রোহ শুরু হয়েছে। বহুসংখ্যক বিজেপি নেতা কর্মী এমনকি বিধায়কও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছেন। যদিও তারা কারা এই মুহূর্তে তা বলার সময় আসেনি।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একটা কথা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, জনগণের রায়কে মেনে নিয়ে কোনও সরকারকে জোর করে ভেঙে দেওয়ার পক্ষপাতী নয় তৃণমূল। কিন্তু গোটা রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি মানুষের সমর্থন যেমন বাড়ছে। এক ভাবে বাড়ছে নেতা কর্মী বিধায়কদের তৃণমূলের প্রতি আস্থা।
এদিকে, কলকাতা থেকে প্রায় প্রতিদিন নিয়ম করে নেতাকর্মীদের ত্রিপুরায় যাওয়া-আসা সে রাজ্যে কর্মী-সমর্থকদের মনোবল বাড়াচ্ছে। এই অবস্থায় ‘একুশে জুলাই’ বা ‘খেলা হবে’ দিবসের পর আগামীকাল অর্থাৎ শনিবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করা হবে বলে খবর। ইতিমধ্যেই এই নিয়ে সব রকম প্রস্তুতি শুরু করা হয়েছে। এক্ষেত্রে জমায়েত এড়িয়ে ছোট ছোট আকারে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করা হবে বলে খবর। একইসঙ্গে একাধিক জায়গায় করোনা বিধি মেনে জায়ান্ট স্ক্রিনে শোনানো হবে তৃণমূল সুপ্রিমোর বক্তৃতা। এখন দেখার ২৮ আগস্ট তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের এই কর্মসূচি পালনের ক্ষেত্রে আবার পুলিশি বাধার মুখে পড়তে হয় কিনা!