পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : চলে গেলেন বিখ্যাত মানবাধিকার কর্মী জে. এস বন্দুকওয়ালা। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না … । মৃতু্যকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। রেখে গেলেন এক ছেলে ও এক মেয়েকে। উভয়েই থাকেন মার্কিন যুক্তরাষ্টেÉ। বহু দিন ধরেই তিনি ডায়াবিটিস হ*দরোগে ভুগছিলেন।
ভাদোদরার এমএস ইউনিভার্সিটির পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক ছিলেন তিনি। শনিবার সকালে নিজের বাসভবনে মৃতু্য হয় খ্যাতনামা এই জনপ্রিয় এই অধিকার কর্মীর। বন্দুকওয়ালা পদার্থবিদ্যায় ডক্টরেট করেছিলেন। অধ্যাপনা করতেন ভাদোদরার মহারাজা সায়াজিরাও বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০৭ এ সেখান থেকে অবসর নেন তিনি। আজীবন তিনি অমুসলিম এলাকায় কাটিয়েছেন। চারবার আক্রান্ত হয়েছেন। গুজরাত দাঙ্গার সময় তাঁর বাড়ির ওপর হামলা হয়েছিল। দাঙ্গাবাজরা গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে এসেছিল। জ্বালিয়ে দিয়েছিল তাঁর বাড়ি। বহুবার ২০০২ এর এই ভয়াবহ স্মৃতি তুলে ধরেছেন তিনি।
এক সাক্ষাতে বন্দুকওয়ালা বলেছিলেন– প্রাণ বাঁচাতে সেদিন তাঁকে প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নিতে হয়েছিল। আমি প্রতিবেশীর বাড়িতে গিয়েছিলাম। তাঁরা ছিলেন ব্রাহ্মণ। দরজা খুলে ওরা আমাকে ভিতরে ঢুকিয়ে নিয়েছিল। লুকিয়ে রেখেছিল বাথরুমে । সেই সময় আমার কানে আসছিল দাঙ্গাবাজদের হুঙ্কার। একজন পুলিশ কনস্টেবল হামলাকারীদের উদ্দেশে বলছিল– ‘তোমাদের কাছে আর মাত্র ১৫ মিনিট সময় আছে। এর মধ্যে যা খুশি কর। এর পনের মিনিট পর– একটি পুলিশ ভ্যান এসেছিল। ততক্ষণে দাঙ্গাবাজরা চুরি করা জিনিসপত্র নিয়ে চম্পট দিয়েছিল।
Rights Activist, reformist, advocate of an inclusive society, ex-nuclear physics prof at Maharaja Sayajirao Uni Vadodara, Prof Bandukwala, helped thousands of children with Zidni Ilma trust. Buried this afternoon in Vadodra. Will be remembered for long.https://t.co/yMP0d0qYMF
— Zafarul-Islam Khan (@khan_zafarul) January 29, 2022
তাঁর ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে বলতে গিয়ে অল ইন্ডিয়া মুসলিম মজলিস মুশাওয়ারাতের সভাপতি নাভিদ হামিদ বলেছেন– তিনি দাঙ্গার সময় ভীষণ কষ্ট পেলেও হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি তাঁর মনে কোনও অসন্তোষ ছিল না। তিনি ছিলেন হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের প্রতীক। তিনি ছিলেন সবরও তাকওয়ার প্রতীক। তিনি চাইতেন এমন একটা সমাজ যেখানে সবার যোগদান থাকবে। দিল্লি সংখ্যালঘু কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান জাফরুল ইসলাম খান তাকে সম্প্রদায়ের মহান স্তম্ভ এবং মহান মানুষ হিসাবে বর্ণনা করেছেন। জাফরুল আরও বলেছেন– ২০২০ তেও বিদ্বেষী বাহিনী তাঁর বাড়িতে আগুন দিয়েছিল। বেতন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তবুও তিনি পাথরের মতো দাঁড়িয়ে ছিলেন। আপনার অভাব পূরণ হবে না কোনও দিন।
Very sad news from Vadodora. Prof JS Bandukwala whose house was burnt during the 2002 riots and who remained a staunch proponent of Hindu Muslim amity has passed away. A gentle dignified man of academia who symbolised the human loss caused by mindless violence. RIP.
— Rajdeep Sardesai (@sardesairajdeep) January 29, 2022
২০১৫ সালে ভাদোদরা পৌর কর্পোরেশনের কল্যাণনগর বস্তির ৪৫০ টি মুসলিম পরিবারের হাউজিং নকশা বাতিল করে দেয়। বন্দুকওয়ালা এর তীব্রই বিরোধিতা করেছিলেন। ভাদোদরা পৌরসভা এই পরিবারগুলিকে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় স্থানান্তর করার দিয়েছিল। তা প্রত্যাখ্যান প্রত্যাখ্যান করেছিলেন তিনি। ২০১৮ সালে– তিনি নাগরিক সংস্থার সিদ্ধান্তকে ‘বর্ণবিদ্বেষী’ বলে অভিহিত করে গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় র*পানিকে চিঠি লিখেছিলেন