ইনামুল হক, সামশেরনগর: সুন্দরবনের রক্ষক হল গাছ। আর সেই গাছের সেবা বাদ দিয়ে কোন কিছু হতে পারে না। কেবল বনবিবির পূজো নয়, জঙ্গলের গাছ পূজোও দরকার এমনটা মনে করেন সেবাইত পরান মন্ডলসহ সুন্দরবনের বাসিন্দারা। হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের কালিতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের ২ নম্বর সামশেরনগর কুঁকড়ে খালি জঙ্গল নদীর পাশে বনবিবির থানের উঠোনে প্রায় একশো বছর আগে তারই পূর্ব পুরুষদের হাতে লাগানো কেওড়া গাছটিকে আজও সমান শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখেন পরান মন্ডলদের মতো জঙ্গলের বাসিন্দারা, নিয়মিত পূজো দিয়ে আসছেন। মঙ্গলবার হিঙ্গলগঞ্জ সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই গাছের পূজো দিলেন। বনবিবির থানের পাশাপাশি নতুন লাল কাপড় দিয়ে মুড়ে ফেলা হয় গাছের গোড়াটিকে।আলপনা এঁকে সাজানো হয় চত্বর। মুখ্যমন্ত্রী একটি নতুন বস্ত্র দিয়ে তাঁর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।পাশাপাশি বনবিবির সেবাইত ও উত্তরসুরি পরান মন্ডলকে নতুন শাল, গামছা, কাপড়, ফুল মিষ্টি দিয়ে সংবর্ধনা দেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বনবিবি ও বৃক্ষ পূজোর মধ্য দিয়ে সুন্দরবন সফরের সূচনা করেন। তিনি বলেন, আমার উদ্দেশ্য ছিল নিজের চোখ দিয়ে দেখে বনবিবি দেবীর মন্দিরে পূজা করবো। প্রকৃতি দেবী এবং বৃক্ষের পূজো করবো। নদীমাতৃক দেশ বাংলা। প্রকৃতির তান্ডব, সাইক্লোন, নদী ভাঙ্গনের পাশাপাশি জলে কুমির, ডাঙ্গায় বাঘ এইসব নিয়ে সুন্দরবনের মানুষ জীবন যাপন করে। অনেক কষ্ট এখানকার মানুষের। আমরা ইতিমধ্যে সুন্দরবনকে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে ১৫ কোটি ম্যানগ্রোভ গাছের চারা বসানোর কাজ শুরু করেছি। তিনি আরো বলেন,বনবিবির থানটা এখন কাঁচা রয়েছে। ওটা খুব দ্রুত পাকা করা হবে। এই থানের প্রতিষ্ঠাতার উত্তরসূরী পরান মণ্ডল দাবি করেছিলেন আমার কাছে। সেই দাবি মেনে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন দ্রুত তার রূপায়ণের। এই বনবিবির থান পাকা হয়ে গেলে উদ্বোধন করতে আরো একবার সুন্দরবনে আসবেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি বলেন, যাতে সুন্দরবনের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর আরো দ্রুত উন্নয়ন ঘটে তার ব্যবস্থা করবো।