পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: এসএসসি দুর্নীতি মামলায় এবার শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারী সহ তার মেয়ের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করল সিবিআই। আজ পরেশ অধিকারীকে বিকেল ৩টের মধ্যে সিবিআই অফিসে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু সেই নির্দিষ্ট সময় সীমা পার হয়ে গেলেই হাজিরায় আসেননি তিনি। এর পরেই তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে পরেশ অধিকারী ও তার মেয়ের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে সিবিআই।
জানা গেছে, পরেশ অধিকারীর মেয়ের নাম মেরিট লিস্টের ৬ নম্বরে ছিল। পরে মন্ত্রীকন্যাই চাকরি পেয়ে যান। আর মেরিট লিস্টের ১ নম্বরে থাকার নাম বাদ হয়ে যায়। এই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয় পরেশ অধিকারীকে। কিন্তু তলবের পর থেকে আশ্চর্যজনকভাবে মেয়েকে নিয়ে গা ঢাকা দেন পরেশ অধিকারী। গতকাল বর্ধমান স্টেশনে দেখা যায় তাকে। তার পর থেকে আর খোঁজ মিলছিল না মন্ত্রীর। আজ বাগডোগরা বিমান বন্দরে দেখা যায় তাকে। সাংবাদিকদের তিনি জানান কলকাতায় ফিরছেন তিনি। প্রায় দেড়দিন পর খোঁজ মিলল প্রতিমন্ত্রীর। তবে মেয়ের দেখা পাওয়া যায়নি এখনও।
এদিকে আজ সিবিআইয়ের কাছে সময়ে চেয়ে সিবিআইয়ের কাছে ইমেল পাঠিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।
এদিন পরেশ অধিকারীর আইনজীবী আদালতকে জানান, মন্ত্রী এখন কোচবিহারে রয়েছেন। তিনি বিকালেই কলকাতায় আসার বিমান ধরবেন। দুপুর দু’টো নাগাদ মন্ত্রী নিজেই ইমেইল করে সে কথা জানিয়েছেন। তখন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় প্রশ্ন করেন, পরেশ অধিকারী কোথা থেকে বিমানে উঠবেন, বর্ধমান না কোচবিহার থেকে? তার উত্তরে মন্ত্রীর আইনজীবী জানান, বিকেল পাঁচটা নাগাদ তিনি বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে কলকাতার বিমানে উঠবেন এবং সন্ধে সাড়ে ছ’টা নাগাদ তিনি কলকাতায় নামবেন।
এরপরই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মন্ত্রী পরেশ অধিকারী কলকাতা বিমানবন্দরের নামলে সেখান থেকে তাঁকে সরাসরি নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে নিয়ে আসার জন্য বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটকে দায়িত্ব দেন। গোটা প্রক্রিয়াটা বিধাননগরের সিপি এবং বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে সুনিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সেইসঙ্গে বিচারপতি জানিয়েছেন, যদি তিনি বিমানে না থাকেন, তাহলে ধরে নিতে হবে মন্ত্রী আদালত ও সিবিআইকে ভাঁওতা দিচ্ছেন।
পুলিশি ঘেরাটোপের মাধ্যমে মন্ত্রীকে বিমানবন্দর থেকে সিবিআই দফতরে নিয়ে আসার আদালতের এই নির্দেশের বিরোধিতা করেছিলেন মন্ত্রীর আইনজীবী। কিন্তু সেই বিরোধিতাকে কার্যত উড়িয়ে দিয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় হালকা মেজাজে বলেছেন, ‘পুলিশ তাঁকে জামাই আদর করে নিজাম প্যালেসে নিয়ে যাবে।’