পারিজাত মোল্লা: ভিন রাজ্য অসমের যুবক ফাইজান আহমেদের মৃত্যু রহস্য এখনও ভেদ হয়নি।তবে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি রাজশেখর মান্থার এই মামলায় ধারাবাহিকভাবে যে নির্দেশিকা গুলি দিচ্ছেন তাতে রহস্য মৃত্যুর সত্য উদঘাটনে খুবই কার্যকরী বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুর আইআইটি পড়ুয়া ফাইজান আহমেদের দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের পর এবার তদন্তের জন্য সিট গঠন করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। অসমের ফাইজান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় আইআইটি-র আধিকারিকেরাও আংশিক অভিযুক্ত বলে এদিন এজলাসে মন্তব্য করেছেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার। বুধবার বিচারপতির নির্দেশ, -‘ প্রয়োজনে নারকো অ্যানালাসিস টেস্ট করাতে পারবে ওই তদন্তকারী অফিসারদের দল। ১৪ জুলাই প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে হবে ওই কমিটিকে’।
গত বছরের অক্টোবরে মৃত্যু হয় ওই ছাত্রের। এই ঘটনায় খুনের অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় নিহতের পরিবার।কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত অফিসার ও সিআইডি-র অফিসারও থাকবেন ওই কমিটিতে। এদিন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বলেন, “আইআইটি বা তাদের কিছু অফিসার এই ঘটনায় অভিযুক্ত, অন্তত আংশিক অভিযুক্ত। তাই দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এখন আইআইটি-কে দেওয়া সম্ভব নয়।” চার্জশিট জমা পড়ার পরে রিপোর্ট দেওয়ার বিষয়টা ভাবা যাবে বলে এদিন জানিয়েছেন বিচারপতি।
আইআইটি-রআইনজীবী বলেন, -‘ সবাই যদি রিপোর্ট পেতে পারে, তাহলে আইআইটি কেন নয়? পুলিশের ওয়েবসাইটে পিএম রিপোর্ট আপলোড থাকে। সেখান থেকে নামিয়ে নেওয়া যায়’। অন্যদিকে, পরিবারের অভিযোগ, -‘এখনও ছাত্রের দেহ অসমে পাঠানো হয়নি’। এ কথা জেনে মৃতের দেহ দ্রুত অসমে পাঠানোর নির্দেশও দিয়েছে আদালত। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি প্রাথমিক রিপোর্টে জানিয়েছিল, -‘ ছাত্রের মাথায় ভারী জিনিস দিয়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল’। প্রথম ময়নাতদন্তে তার উল্লেখ ছিল না। এরপরই আদালত দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। বি টেক মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন ফাইজান। গত বছর ১৪ অক্টোবর আইআইটি-র হস্টেলের ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছিল তাঁর ঝুলন্ত দেহ।আইআইটি খড়্গপুরে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্যের সিনিয়র আইপিএস কে জয়রামণের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গড়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
বুধবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার নির্দেশ, -‘ ওই ঘটনায় নতুন তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। কে জয়রামণের নেতৃত্বে ওই কমিটিতে থাকবেন কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড দফতরের অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক এবং সিআইডি-র অফিসারেরা’।মৃত্যুর রহস্য খুঁজতে বা খুনের কিনারা করতে এই কমিটি নার্কো টেস্ট করাতে পারবে। ১৪ জুলাই রিপোর্ট দেবে এই তদন্তকারী দল। এদিন নিহত পড়ুয়ার পরিবার আদালতের কাছে অভিযোগ জানায়, -‘অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং প্রথম ময়নাতদন্তকারী অফিসার তথ্য বিকৃত করে নথি লোপাটের চেষ্টা করেছেন’। আদালতের কাছে পরিবারের আর্জি, -‘তাঁদের ( অভিযুক্ত অফিসাররা) বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার অনুমতি দেওয়া হোক’। তবে বিচারপতি মান্থার জানান, -‘আদালত এখনই এ বিষয়ে কোনও মতামত দেবে না। নতুন তদন্তকারী সংস্থার রিপোর্ট দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবে’।