শফিকুল ইসলাম, নদিয়া: গরু চোর সন্দেহে গণপ্রহার, পুলিশ গাড়ির ধাক্কায় ১৫ বছরের স্কুল ছাত্রের মৃত্যু ঘিরে বুধবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠল নদিয়ার ধানতলা। এদিন জেলার বিভিন্ন থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন বিজেপি কর্মী-সর্মথকরা। এদিকে, পুলিশের গাড়ির চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে। যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া ধানতলার কুলগাছি গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত কয়েকদিন ধরে তাঁদের এলাকা থেকে গরু চুরি হয়ে যাচ্ছে। এর পর সন্দেহবশত পাশের শিলবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা নাসির মণ্ডল ও তাঁর বাবা রশিদ মণ্ডল ডেকে পাঠানো হয়। গ্রামে সালিশি সভা বসে। গ্রামবাসীদের দাবি, নাসির না এলেও, তাঁর ছেলে রশিদ আসেন। সালিশি সভায় তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ প্রহৃত ব্যক্তিকে থানায় নিয়ে যেতে চাইলে গ্রামবাসীরা বাধা দেয়।
পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করতে গেলে জনরোষ তাদের উপর গিয়ে পড়ে। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। ইটের ঘায়ে আহত হন দত্তপুলিয়া ফাঁড়ির সাব-ইনস্পেক্টর মুহাম্মদ মনিম আলম-সহ দুই পুলিশকর্মী। পুলিশ ভয়ে দ্রুততার সঙ্গে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময়ে তিনজন ধাক্কা খায় বলে অভিযোগ। গাড়ির তলায় পিষে যায় এক স্কুল ছাত্র। এরপরই বুধবার ধানতলা থানায় ডিউটিতে এলে তাপস পাল নামে ওই পুলিশের গাড়ির চালককে গ্রেফতার করা হয়। এদিন তাকে আদালতে তোলা হলে তার জামিন মঞ্জুর হয়।
বিজেপির নদিয়া সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক আশিসবরণ উকিলের কথায়, ‘চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে ‘গটআপ’। কার নির্দেশে এটা হয়েছে। সেই স্যারকে ধরতে হবে।’ রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘বিষয়টি কাঙ্ক্ষিত নয়। মৃত কিশোরের পরিবারের পাশে সকলেরই দাঁড়ানো উচিত। বিজেপি অযথা এটা নিয়ে রাজনীতি করছে।’ বর্তমানে আহত রশিদ মণ্ডল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এদিন সকাল থেকেই থমথমে ছিল গোটা গ্রাম। নতুন করে যাতে উত্তেজনা না ছড়ায় সেজন্য পুলিশের পক্ষ থেকে রুটমার্চ করা হয়।