পুবের কলম প্রতিবেদকঃ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি নতুন দায়িত্ব নেওয়ার পর ঘোষণা করেছিলেন প্রতি বছর টেট পরীক্ষা হবে। সেই প্রক্রিয়া এবার শুরু করল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। প্রাথমিকের স্কুলে ১১ হাজার শূন্যপদের নিয়োগের জন্য ১১ ডিসেম্বর টেট পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে সোমবার ঘোষণা করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।
এদিন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল জানান, পুজোর আগেই টেটের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। প্রাথমিকের টেট নেওয়ার জন্য প্রস্ততি শুরু হয়েছে। চলতি সপ্তাহেই তার বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে যাবে। অন্যদিকে, প্রাথমিকের টেটের জন্য লক্ষ্মীপুজোর পর থেকে নির্দিষ্ট একটি পোর্টাল চালু হবে। সেখানে আবেদন করা যাবে। কীভাবে আবেদন করতে হবে, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ তা জানিয়ে দেবে ওয়েবসাইটে।
পাশাপাশি এদিন প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক নিয়োগের কথাও বলা হয়। পুজোর আগে এই নিয়োগেরও বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে পর্ষদ। তার আবেদন প্রক্রিয়া কালীপুজোর পর থেকে শুরু হবে।
এই নিয়োগসংক্রান্ত একটি পোর্টালও থাকবে পর্ষদের তরফে। ১১ হাজারের বেশি শূন্যপদে প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষিকা নিয়োগ হবে। পর্ষদ সভাপতি এদিন বলেন, ১৮৫ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ১১ হাজারের বেশি শূন্যস্থান আছে। সেই শূন্যপদের যোগ্য তাঁরাই, যাঁরা টেট পাশ করে গিয়েছেন। একই সঙ্গে ২০১৪ ও ২০১৭ সালে যাঁরা টেট পাশ এবং এখন যাঁরা আন্দোলন করছেন তাঁরা এখানে আবেদনের যোগ্য।
একই সঙ্গে পর্ষদ সভাপতি আন্দোলনকারীদের কাছে আবেদন করে বলেন, আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিন। নিয়োগের জন্য আবেদন করুন। স্বচ্ছভাবে নিয়োগ হবে। ডিভিশন অব মার্কস বেরে করা হবে। ইন্টারভিউয়ের ভিডিয়োগ্রাফিও হবে।
এদিনই পুজোর আগে নিয়োগের দাবিতে বিকাশ ভবনে যান চাকরিপ্রার্থীদের একটি দল। নবম থেকে দ্বাদশ স্তরের মেধাতালিকাভুক্তদের একই নোটিফিকেশনে চাকরির দাবি নিয়ে বিকাশ ভবনে যান তাঁরা।
এদিন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, নিয়োগ তো প্রাথমিক পর্ষদ এবং এসএসসি করে। তারা নিয়মিত বৈঠক করছে। কোর্টের সঙ্গে ‘ডায়লগ ওপেন’ চলছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রায় জট ছাড়ানোর মুখে।
এই সময় তো কেউ মিছিল করে না। আন্দোলনকারীদের বলব, মিছিল না করে বা অবস্থানে না থেকে সরকারের উপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর ভরসা রাখুন। যদি কেউ জট খুলতে পারেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই পারবেন। তাঁর নির্দেশে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে ক্রমাগত মিটিং চলছে। সরকারের উপর ভরসা রাখা উচিৎ।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল, সেপ্টেম্বরের মধ্যে টেট পরীক্ষা নিতে হবে। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে টেট পরীক্ষা নেওয়া যাবে না বলে সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়ে দিতে চলেছে পর্ষদ।
২০২০ সালের প্রাথমিক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আদালতের নির্দেশে কয়েক হাজার চাকরির দিয়েছে পর্ষদ। পড়ে থাকা ৩ হাজার ৯২৯ শূন্য পদে সকলকে চাকরির নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ৭ নভেম্বর মধ্যে নিয়োগ রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
পাশাপাশি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক শূন্যপদে আরও ৬৫ জন টেট পরীক্ষার্থীকে চাকরি দিতে নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এর আগে বহু টেট পরীক্ষার্থীকে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। পুজোর আগেই তাঁদের নিয়োগপত্র দিতে হবে, নির্দেশ ছিল এমনটাই।
২০১২, ২০১৪, ২০১৭ সালে টেট পরীক্ষা নেয় পর্ষদ। এই টেট পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগও উঠেছে। ফলে নতুন করে টেট পরীক্ষা নেওয়ার তৎপরতা শুরু করেছে পর্ষদ।