পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: ঘরের বাইরে মুখাকা বোরকা ও নিকাব পরা নিষিদ্ধ। গতবছর গণভোটের ফলাফলের ভিত্তিতে বোরকা-নিকাব নিষিদ্ধ করেছিল সুইৎজারল্যান্ড।
এবার নিরাপত্তার অজুহাতে এগুলো পরা আটকাতে আরও কঠোর আইন আনতে চলেছে দেশটি। ঘরের বাইরে বোরকা-নিকাব পরলে ১;০০০ সুইস ফ্রাঙ্ক পর্যন্ত জরিমানার বিধান রেখে একটি আইন করতে চলেছে সুইৎজারল্যান্ড।
ভারতীয় মুদ্রায় জরিমানার পরিমা ৮৪ হাজার টাকার মতো। খসড়া আইনটি গত বুবার পার্লামেন্টে পাঠিয়েছে সুইস সরকার। এর আগে; গত বছর গণভোটের মাধ্যমে জনসম্মুখে মুখ ঢেকে চলাচল নিষিদ্ধ করে সুইৎজারল্যান্ড।
এই সিদ্ধান্ত ইসলাম-বিদ্বেষী ও বৈষম্যমূলক বলে অভিযোগ উঠলেও ওই গণভোটে দেশটির ৫১ দশমিক ২ শতাংশ ভোটার বোরকা-নিকাব নিষিদ্ধ করার পক্ষে মত দেয়। গণভোটের সেই বিতর্কিত রায়ের ওপর ভিত্তি করেই এখন নতুন আইন প্রয়ন করছে সরকার।
আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে; মুখ ঢাকা পোশাকের ওপর নিষোজ্ঞার লক্ষ্য হচ্ছে জননিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা। ‘কাউকে শাস্তির আওতায় আনা আইনের মূল উদ্দেশ্য নয়।’ প্রস্তাবিত আইনটি সাধারণ ভাবে ‘বোরকা ব্যান’ বলে পরিচিত হলেও এতে বোরকা বা নিকাবের কথা উল্লেখ করা হয়নি। বলা হয়েছে; মুখ ঢাকে এমন পোশাকের কথা।
খসড়া আইনমতে; নাগরিকদের বাড়ির বাইরে চলাচল করার সময় অবশ্যই মুখ খুলে রাখতে হবে।
উদাহরস্বরূপ; কোনও মুসলিম নারী চুল আবৃত করে এমন হিজাব পরতে পারবেন। তবে কোনও নিকাব বা বোরকা পরতে পারবেন না। সুইৎজারল্যান্ডের প্রধান ডানপন্থী রাজনৈতিক দল সুইস পিপল’স পার্টির একটি সংসদীয় কমিটি পার্লামেন্টে এ আইনের খসড়া প্রস্তাব জমা দেয়।
পার্লামেন্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য সমর্থন দিলে প্রস্তাবটি আইনে পরিণত হবে। সুইৎজারল্যান্ডে মুসলিমদের সংগঠন ‘দ্য ফেডারেশন অব ইসলামিক অর্গানাইজেশন ইন সুইৎজারল্যান্ড’ অবশ্য প্রস্তাবিত এই আইনের নিন্দা জানিয়েছে।
সংগঠনটির নেতারা বলেছেন; ‘সাংবিানিকভাবে নারীদের পোশাকবিধি নির্দিষ্ট করে দেওয়া নারী স্বাধীনতার পরিপন্থী পদক্ষেপ।’
উল্লেখ্য; সুইৎজারল্যান্ডের জনসংখ্যা ৮৬ লক্ষের কিছু বেশি। আর দেশটির জনসংখ্যার ৫ শতাংশ মুসলিম এবং তাদের সবাই তুরস্ক; বসনিয়া অ্যান্ড হারজেগোভিনা ও কসোভো থেকে আসা।
ইউরোপের দেশগুলোতে বোরকা বা হিজাব বিতর্ক নতুন নয়। ইউরোপীয় অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান ইসলামভীতি ও মুসলিম বিদ্বেষের মধ্যে একটার পর একটা দেশে বোরকা ও হিজাব নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবার সুইৎজারল্যান্ডে বোরকা পরলে জরিমানার আইন হচ্ছে।