নয়াদিল্লিঃ রাজ্য হিসেবে কোন রাজ্যে কোন কোন ধর্মীয় গোষ্ঠী সংখ্যালঘু, তা চিহ্নিত করার আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যে মামলা হয়েছে, তা নিয়ে অবস্থান ঠিক করে হলফনামা দিতে শীর্ষ আদালতের বিচারপতিরা ‘শেষ সুযোগ’ দিলেন কেন্দ্রীয় সরকারকে।বিচারপতি এস এস কাউল এবং বিচারপতি এম এম সুন্দরেশকে নিয়ে গড়া বেঞ্চ এই আদেশ দিয়েছে।কেন্দ্রকে বলা সত্বেও বারবার এই মামলায় সঠিক অবস্থান নিতে গড়িমসি করছে। শুক্রবার এই মামলার শুনানিতেও কেন্দ্রের হয়ে সলিসিটর জেনারেল আরও ৪ সপ্তাহ সময় চান। তখনই বিচারপতিরা এই কথা বলেন।সুপ্রিম কোর্টে যে মামলা হয়েছে, তাতে দাবি করা হয়েছে, ৬ রাজ্য এবং ২ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে হিন্দুদের সংখ্যালঘু হিসেবে ঘোষণা করা হোক। ‘হিন্দু’দের রক্ষাকর্তার দাবিদার বিজেপি সরকারই এই দাবি নিয়ে গড়িমসি করছে। এই মামলা করেছেন অশ্বিনী উপাধ্যায়।তিনি ১৯৯২ সালের ন্যাশনাল কমিশন অফ মাইনরিটিজ অ্যাক্ট এর ২(সি)ধারা চ্যালেঞ্জ করে দাবি করেছেন, ‘ওই আইনে মুসলিম, খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন এবং জরাথ্রুষ্টদের সংখ্যালঘু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অথচ অনেক রাজ্যেই হিন্দু, বাহাই এবং ইহুদিরা সংখ্যালঘু, তবু তাঁদের সেই স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি’। শ্রীউপাধ্যায়ের দাবি, মিজোরামে হিন্দুরা জনসংখ্যার ২.৭৫ শতাংশ, নাগাল্যাণ্ডে ৮.৭৫ শতাংশ, মেঘালয়ে ১১.৫৩ শতাংশ, অরুণাচল প্রদেশে ২৯ শতাংশ, মণিপুরে ৩১.৩৯ শতাংশ, পাঞ্জাবে ৩৮.১০ শতাংশ এবং জম্মু–কাশ্মীরে ২৮.৪৪ শতাংশ। আর দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে জনসংখ্যার মাত্র ২.৫ শতাংশ হিন্দুরা।তবু কেন এই ৬ রাজ্য এবং ২ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে হিন্দুদের সংখ্যালঘুর স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে না? তাঁর মতে, লাদাখ, মিজোরাম, লাক্ষাদ্বীপ, কাশ্মীর, নাগাল্যাণ্ড, মেঘালয়, অরুণাচল প্রদেশ, পাঞ্জাব এবং মণিপুরে হিন্দুরা প্রকৃতই সংখ্যালঘু।অথচ তাঁদের সংখ্যালঘু হিসেবে স্বীকৃতি নেই। সংবিধানের ২৯ ও ৩০ অনুচ্ছেদে যে অধিকার দেওয়া হয়েছে তা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে হিন্দুদের।শ্রী উপাধ্যায় প্রশ্ন তুলেছেন, ‘মিজোরাম, মেঘালয়, নাগাল্যাণ্ডে সংখ্যায় বেশি খ্রিস্টানরা, অথচ তাঁদের সংখ্যালঘু মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। সেইমতো সব সুবিধা ভোগ করছেন তাঁরা। অরুণাচল, গোয়া, কেরল, মণিপুর, তামিলনাড়ু এবং পশ্চিমবঙ্গেও খ্রিস্টানরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন। অন্যদিকে পাঞ্জাব, দিল্লি, হরিয়ানায় এত শিখ, তবু তাঁদের সংখ্যালঘুর মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। জম্মু–কাশ্মীর, লাক্ষাদ্বীপে মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ, অথচ তাঁদের সংখ্যালঘুর মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অসম, পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশ, কেরল ও বিহারে মুসলিমরা ভালো সংখ্যায় বাস করেন, তবু তাঁরা সংখ্যালঘুর মর্যাদা এবং সুবিধা ভোগ করছেন। তাহলে ৬ রাজ্যে এবং ২ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে হিন্দুরা কেন সংখ্যালঘুর মর্যাদা পাবেন না’?