পারিজাত মোল্লাঃ বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে বড়সড় আইনী ধাক্কা খেলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।নন্দীগ্রামের গেরুয়া বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী কলকাতা হাইকোর্ট থেকে রক্ষাকবচ পেয়েছিলেন। কলকাতা হাইকোর্টের একদা সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার তাঁর বিরুদ্ধে রাজ্য পুলিশের দায়ের করা ২৬টি এফআইআর-এ স্থগিতাদেশ দেন।
একই সঙ্গে জানিয়েছিলেন, -‘ নতুন মামলা করতে গেলেও আদালতের অনুমতি নিতে হবে’।কিন্তু এদিন শুভেন্দু অধিকারীর রক্ষাকবচ প্রত্যাহার করল ডিভিশন বেঞ্চ।তবে গ্রেপ্তারির ক্ষেত্রে আদালতের অনুমতি আবশ্যিক। বৃহস্পতিবার বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় এবং বিচারপতি বিশ্বরূপ চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ অন্তর্বর্তী নির্দেশে জানায়, -‘ শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে এফআইআর করতে পারবে পুলিশ।
তবে অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখতে হবে। অভিযোগ গ্রহণযোগ্য মনে হলে এফআইআর করা যাবে। পাশাপাশি তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে বিরোধী দলনেতাকে’। যদিও আপাতত সুমন সিংহের করা একটি জনস্বার্থ মামলায় এই নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এক মাস পরে আবার এই মামলার শুনানি রয়েছে। রাজের পঞ্চায়েত ভোটে অশান্তি ছড়ানো ও রাজনৈতিক হিংসায় মদত দেওয়ার অভিযোগে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল।
তাঁর মন্তব্য এবং কয়েকটি সাংবাদিক সম্মেলনের ভিডিও ফুটেজ, ব্যক্তব্যর নথি তুলে ধরে মামলা করা হয়। শুভেন্দুর বিরুদ্ধে অভিযোগ, বেশ কয়েকটি দলীয় সভায় তিনি বিজেপি কর্মীদের কখনও ব্যালট বক্স ছিনিয়ে জলে ফেলার পরামর্শ দিয়েছেন আবার কখনও রাজ্যে এমন অশান্তি করতে বলেন যাতে ৩৫৫ ধারা লাগু করা যায়। মামলাকারীর দাবি , -‘ পুলিশ হাইকোর্টের নির্দেশে কোন এফআইআর করতে পারছে না শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জমা পড়া সত্বেও’।
কিন্তু এবার শুভেন্দুর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার আর্জি জানিয়ে মামলা হল। সুমন সিং নামে এক আইনজীবী জনস্বার্থ মামলা করেছেন। তাঁর অভিযোগ,-‘ নন্দীগ্রাম, বড়জোড়া, নয়াগ্রাম-সহ নানা জায়গায় শুভেন্দুর মন্তব্য পঞ্চায়েত নির্বাচনের অশান্তিতে প্ররোচনা দিয়েছে। উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছেন শুভেন্দু। তাই কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্য পুলিশের ডিজিকে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দিক’।
কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এদিন অনুপস্থিত থাকায় বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ মামলাটি শোনে। শুনানির সময় মামলাকারীর আইনজীবীর বক্তব্য, -‘ শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করতে পারছে না। কারণ কলকাতা হাইকোর্টের রক্ষাকবচ দিয়েছে। বারবার সেই নির্দেশ দেখিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কলকাতা হাইকোর্টের আগের নির্দেশ ছিল অন্যায়ভাবে এফআইআর করা যাবে না। কিন্তু যদি কোনও অভিযোগের সত্যতা থাকে তাহলেও এফআইআর করা যাবে না? এমন নির্দেশ তো দেওয়া হয়নি।’