পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ চলতি বছরের উচ্চমাধ্যমিকে ভালো নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হলেও , স্বপ্নপূরণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল বাবার আর্থিক অবস্থা। ইচ্ছা ছিল হোটেল ম্যানেজমেন্ট করে বড় হোটেলে চাকরি করা। তারপর নিজস্ব একটা হোটেল খোলা। তবে অভিভাবকের ইচ্ছা ছিল ছেলেকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করার। ইচ্ছা থাকলেও উপায় নেই।
আভিভাবকের ক্ষমতা ছিল না ছেলেকে বেসরকারি কোনও সংস্থাতে পড়ালেখা করানো। তাই ছেলেকে অন্য কলেজে ভর্তি হওয়ার কথাও জানিয়ে দেন তারা। বাবা মাকে ঋণ নেওয়ার পরামর্শ দিলেও, ঋণ পরিশোধ করার ক্ষমতা তাঁর বাবা মার ছিল না। সেই নিয়ে মৃত তরুণের সঙ্গে তাঁর অভিভাবকের কথা কাটাকাটিও হয়। বকাঝকা করেনও তারা। তারপর হঠাৎ কাউকে না জানিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় সে। অনেক খোঁজা খুজির পরেও মেলেনি হদিশ।তারপর তরুণ নিজেই তাঁর বাবা মাকে ফোন করে জানান, বাঘাযতীনে কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে আছে সে। তারপর এই ঘটনা।
প্রসঙ্গত, মৃত ছাত্রের নাম শুভ্রাংশু মুখোপাধ্যায়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার নরেন্দ্রপুর থানা এলাকার বাসিন্দা। মৃত তরুণের বাবা স্নেহাংশু মুখোপাধ্যায় ওই এলাকারই একটি ওষুধের দোকানের কর্মী।
পুলিশ সূত্রে খবর,দক্ষিণ কলকাতার যাদবপুরের ঘটনা। উল্লেখ্য, বিগত কয়েকদিন আগেই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। পরীক্ষায় খুব ভালো নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয় শুভ্রাংশু মুখোপাধ্যায়। ইচ্ছা ছিল উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা পাশ করলেই হোটেল ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়াশোনা করবে। সেই স্বপ্ন নিয়েই বেঁচেছিল সে। ছোট থেকেই রান্নাবান্নার প্রতি আলাদা ভালোবাসা ছিল। অবসর সময়ে নিজেই রান্না করে খাওয়াতেন পরিবার-পরিজনদের। তবে বাবার আর্থিক অবস্থা ছেলের এই স্বপ্নে বাদ সাধে।
যদিও বাবা মা ছেলের মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করেন নি। শুভ্রাংশুর বন্ধুরা পুলিশকে জানিয়েছে যে , শনিবার থকেই সে খুব চুপচাপ ছিল। অবসাদেও ভুগছিল সে। সোমবার সন্ধে সাড়ে সাতটার পর তিনি বাড়ির ছাদে ওঠেন। রাত ৮ টা নাগাদ বাড়ির ছাদ থেকে আত্মঘাতী হয় সে। হঠাৎ চিৎকার শুনে বাইরে বেরিয়ে আসে তারা। সঙ্গে সঙ্গে ঢাকুরিয়ার বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, গভীর রাতেই মৃত্যু হয় তাঁর।