পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: প্রচলিত প্রবাদ বাক্য অনুযায়ী, বিয়ে হচ্ছে দিল্লি কা লাড্ডু! খেলেও বিপদ, আর না খেলে আফশোস! তা বলে বিয়ে না করলে ক্যানসারের ঝুঁকি? শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্য!
আপনি যদি অবিবাহিত বা সিঙ্গেল থাকেন! বা সঙ্গীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার কারণে দীর্ঘদিন ধরে একাকিত্বে ভুগছেন! তাহলে আপনার জন্য রয়েছে দুঃসংবাদ। অজান্তেই আপনার শরীরে দানা বাঁধছে মরণব্যাধি ক্যানসার।
একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে অবিবাহিত ব্যক্তিদের মধ্যে পাকস্থলী ক্যানসারে মৃত্যুর ঝুঁকি অনেক বেশি। অন্যদিকে, যাঁরা তাঁদের সঙ্গীর সঙ্গে থাকেন, তাঁদের তাঁদের ক্যানসার নিরাময়ের সম্ভাবনা বেশি।
সম্প্রতি প্রকাশিত হওয়া ‘ইনভেস্টিগেটিভ জার্নাল’-এর এক গবেষণায় বলা হয়েছে, যাঁরা অবিবাহিত বা যাঁদের জীবনসঙ্গী নেই, তাঁদের ক্ষেত্রে পাকস্থলীর ক্যানসারে মৃত্যু হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি।
শুধু তাই নয় এর আগে অনেক গবেষণায় বলা হয়েছে, তাড়াতাড়ি বিয়ে করলে মানুষ অকাল মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পায়।
এই ঘটনার পিছনে যুক্তি দিয়ে গবেষকরা জানিয়েছেন, জীবনসঙ্গী পাশে থাকলে একটা মানুষের বেঁচে থাকার ইচ্ছাটা আরও প্রখর হয়ে ওঠে। তা ছাড়া আপনার কোনও প্রকার সমস্যা হলে তিনি খেয়াল রাখতে ও প্রয়োজনীয় সেবা ও যত্ন নিতে পারেন। ফলে রোগীর জন্য স্বাস্থ্যকর আচরণ মেনে চলা সহজ হয়। এমনকি দীর্ঘায়ু লাভের জন্য এসব অভ্যাস একান্তই জরুরি।
আর যারা অবিবাহিত বা সিঙ্গেল, তাদের সমস্যা হল, তারা নিজেদের শরীরের প্রতি অতটাও যত্নবান হন না। এক প্রকার অবহেলা করে বললেই চলে। আর তাতেই রোগ জাঁকিয়ে বসে।
এবার জেনে নেওয়া যাক পাকস্থলী ক্যানসার কি!
পাকস্থলীর ক্যানসার হল আপনার পেটের আস্তরণের মধ্যে ক্যানসারজনিত কোষগুলির বৃদ্ধি। এই কোষগুলি টিউমার হয়ে উঠতে পারে এমন সম্ভাবনা রয়েছে। গ্যাস্ট্রিক ক্যানসার নামেও পরিচিত। এই ধরণের ক্যানসার বেশ কয়েক বছর ধরে ধীরে ধীরে বেড়ে যায়। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় করা কঠিন, কারণ রোগীর প্রাথমিক পর্যায়ে লক্ষণগুলি দেখা যায় না।
এই রোগের লক্ষণ কি?
*অল্প খেলে তৃপ্তি চলে আসে
* পেট ফেঁপে ও ফুলে থাকে
* বমি হয়
* রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়
* খাদ্যগ্রহণের পর খাদ্যনালীতে ব্যথা হয়
* শরীরের ওজন কমে যায়
* বমির সঙ্গে রক্ত কিংবা কালো পায়খানা হতে পারে
যে কারণে পাকস্থলীতে ক্যানসার হয়, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-
* হেলিকোব্যাকটর পাইলোরি নামক এক প্রকার জীবাণুর আক্রমণ
* প্রচুর পরিমাণে মদপান
* অত্যধিক লবণ আছে এমন খাবার গ্রহণ করা
* সংরক্ষিত টিনজাত খাবার
* অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের অভাব রয়েছে এমন খাবার গ্রহণ করা
* যারা ধূমপায়ী এবং ধু্লোবালি স্থানে বাস করে তাদের মধ্যেও এ ক্যান্সার হতে পারে
* বংশগত কারণেও পাকস্থলীতে ক্যানসার হয়
তবে প্রায় ১৪০০ বছর পূর্বে বলে যাওয়া নবী সা: বাণী আজ বিজ্ঞানের সঙ্গে হুবহু কেমন মিলে যাচ্ছে। তিনিও ১৪০০ বছর পূর্বে বলেছিলেন ‘বিয়ে নানান রোগের উপশমকারী’। আজ ১৪০০ বছর পর নানান গবেষণার পর বিজ্ঞানও বলছে বিয়ে করলে অকাল মৃত্যুর মত ঘটনা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
দাম্পত্য জীবন মানবজীবনের অতীব গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এর সূচনাপর্ব হল বিবাহ। বিবাহ হল ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক ইবাদত। কুরআন মাজিদে আল্লাহ তাআলা বলেন: ‘তোমরা বিবাহযোগ্যদের বিবাহ সম্পন্ন কর, তারা অভাবগ্রস্ত হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের সচ্ছলতা দান করবেন; আল্লাহ তো প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞানী।’ (সুরা: ২৪ নুর, আয়াত: ৩২)।
বিয়ে মূলত একজন সুস্থ মানুষের প্রাকৃতিক প্রয়োজন। উপরন্তু মানুষের স্বভাবগত পরিচ্ছন্নতা, মানসিক ভারসাম্য, চারিত্রিক উৎকর্ষতা ও পবিত্রতার অন্যতম উপায় বিয়ে। আজ বিজ্ঞান যেটি গবেষণা করে বলছে, ১৪০০ বছর আগে নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইতিমধ্যেই সেই কথা বলে গেছেন।
উল্লেখ্য, ক্যানসার আক্রান্ত বিবাহিত পুরুষ ও নারীরা অবিবাহিতদের তুলনায় প্রায় ৫ বছর বেশি বাঁচেন এমনটাই গবেষণায় জানা গেছে।