পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: পুরুলিয়ার ঝালদা পুরসভার চেয়ারম্যান পদ যেন ‘মিউজিক্যাল চেয়ার’! গত দেড় – দুই মাসে অদলবদল ঘটেছে পুরসভার চেয়ারম্যান পদে। কলকাতা হাইকোর্টের বিভিন্ন বেঞ্চে এই চেয়ারম্যান পদ নিয়ে মামলা ঘুরেছে এবং ঘুরছেওবৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আইনী ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার।
এদিন ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, -‘ চেয়ারম্যান পদে ফের বহাল করতে হবে শীলা চট্টোপাধ্যায়কে’। সিঙ্গেল বেঞ্চের পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত চেয়ারম্যান পদে বহাল থাকবেন শীলা চট্টোপাধ্যায়ই, এদিন তা জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। এর আগে ঝালদা মহকুমাশাসক শীলা চট্টোপাধ্যায়ের কাউন্সিলর পদ খারিজের নির্দেশ দিয়েছিলেন। পদ খারিজের নির্দেশ কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হয়েছিলেন শীলা।
এখানে তিনি অর্থাৎ শীলা আইনী জয় পেয়েছিলেন ।এরপরই রাজ্যের তরফে অস্থায়ী চেয়ারম্যান হিসাবে সুদীপ কর্মকারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এদিকে এই অপসারণ বেআইনি দাবি তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হয় জাতীয় কংগ্রেস এর জেলা নেতৃত্ব । গত ২০ জানুয়ারি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা শীলা চট্টোপাধ্যায়ের প্রার্থীপদ খারিজের সিদ্ধান্তের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন ।
এর পাশাপাশি সুদীপ কর্মকারকে নতুন চেয়ারম্যান করার সিদ্ধান্তের উপরও স্থগিতাদেশ বহাল রাখা হয়। সিঙ্গেল বেঞ্চের পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পূর্ণিমা কান্দুকে পুরসভা চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপরই রাজ্য ডিভিশন বেঞ্চে যায়।বৃহস্পতিবার বিচারপতি অরিজিত্ বন্দোপাধ্যায় এর ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি চলে। সেখানে রাজ্যের মনোনীত চেয়ারম্যান সুদীপ কর্মকারের অপসারণে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ বহাল রাখে ডিভিশন বেঞ্চ।
ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, -‘ শীলা চট্টোপাধ্যায়ের প্রার্থীপদ খারিজে মহকুমাশাসকের নির্দেশিকার উপরও বহাল থাকবে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ। শুধু তাই নয়, মূল মামলা সিঙ্গেল বেঞ্চে ফেরতও পাঠিয়ে দেয় ডিভিশন বেঞ্চ। উল্লেখ্য, পুরুলিয়ার ঝালদা পুরসভায় ১২টি ওয়ার্ড রয়েছে । গত পুরভোটে কংগ্রেস ও তৃণমূল ৫টি করে আসন পায়। বাকি ২ আসন জেতেন নির্দলের শীলা চট্টোপাধ্যায় ও সোমনাথ কর্মকার। এই দুই নির্দলের সমর্থনে প্রথমে বোর্ড গঠন করেছিল তৃণমূল।
যদিও পরে একে একে সোমনাথ ও শীলা সেই সমর্থন প্রত্যাহার করে নেন। এরপর সেই বোর্ডে অনাস্থা আনে জাতীয় কংগ্রেস। নির্দল কাউন্সিলর সোমনাথ যোগ দেন কংগ্রেসে। তবে শীলা চট্টোপাধ্যায় নির্দলেই থেকে গুরত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেন ঝালদা পুরসভার অনাস্থা পর্বে। কংগ্রেস তাঁকে চেয়ারপার্সন করার কথা ঘোষণা করে। পাল্টা বোর্ড গঠনে সমর্থন করেন শীলাও।
তবে পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুরেশ আগরওয়াল লিখিত অভিযোগে মহকুমাশাসক কে জানান, -‘শীলা চট্টোপাধ্যায় নির্দলে জিতলেও তৃণমূলে যোগ দেন। এখন তিনি আবার কংগ্রেসে সমর্থন করছেন। তাই তাঁর কাউন্সিলর পদে বহাল রাখা ঠিক নয়’ । মহকুমাশাসকের দফতরে শুনানি চলে । শীলার কাউন্সিলর পদ বাতিলও ঘোষণা করেন মহকুমাশাসক । এই পদ বাতিলের নির্দেশ কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হন শীলা।সেখানে তিনি সিঙ্গেল বেঞ্চ এবং ডিভিশন বেঞ্চে স্বস্তি পান।