পারিজাত মোল্লা: সোমবার কেন্দ্রীয় আর্থিক তদন্তকারী সংস্থা ইডিকে নোটিস দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। জেল হেফাজতে থাকা তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের ছেলের জামিন মামলায় ইডিকে নোটিস দেশের শীর্ষ আদালতের। জামিনের আবেদন করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন মানিক ভট্টাচার্যের ছেলে সৌভিক ভট্টাচার্য। সুপ্রিম কোর্টে জামিন চেয়েছেন তিনি। তাঁর এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এবার ইডিকে নোটিস ইস্যু করল সুপ্রিম কোর্ট। এদিন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদী ও বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মার এজলাসে মামলার শুনানি হয়।
জেল হেফাজতে থাকা সৌভিক ভট্টাচার্যের জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করে ইডির তরফে জানানো হয়, ‘আদালতের নির্দেশে সৌভিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে’। যদিও গ্রেফতারের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সৌভিক ভট্টাচার্যের আইনজীবী মুকুল রোহতগি। বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদী সৌভিকের বাবা মানিক ভট্টাচার্য ও মা শতরূপা ভট্টাচার্যের তদন্ত সম্পর্কে জানতে চান। ধৃতের আইনজীবী জানান, ‘মানিক ভট্টাচার্য জেলে আছেন। শতরূপা ভট্টাচার্য জামিন পেয়েছেন’। এরপরই ইডিকে নোটিস জারি করে সুপ্রিম কোর্ট।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতারের পর তাঁর স্ত্রী শতরূপা ভট্টাচার্য ও ছেলে সৌভিক ভট্টাচার্যকেও নোটিস দেয় ইডি। দু’জনই আত্মসমর্পণ করেছিলেন। জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। শতরূপা ইতিমধ্যেই জামিন পেয়েছেন। এবার সৌভিক জামিন পেতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদী এবং বিচারপতি সতীশ চন্দ্র শর্মার বেঞ্চে জামিনের আবেদন করা হয়েছে। ইডির দাবি, ‘দুর্নীতির সরাসরি সুবিধাভোগী মানিক ভট্টাচার্যের পুত্র। শুধু তাই নয়, স্কুল ও ক্লাবের মাধ্যমে নিয়োগ দুর্নীতির টাকা পাচার করেছেন। এমনকি তাঁর অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ২ কোটিরও বেশি টাকা পাচার করা হয়েছে’। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে শৌভিকের আইনজীবীর জামিনের আবেদন করে দাবি, ‘গ্রেফতার না করেই জেলে পাঠানো হয়েছে তাঁর মক্কেলকে’।
এই পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি শৌভিকের বাবা ও মায়ের বর্তমান পরিস্থিতি জানতে চান। আইনজীবী জানান, ‘বাবা এখনও জেলবন্দি, তবে মা জামিনে মুক্ত’। প্রথমে নিয়োগ কাণ্ডে মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতারের পর তাঁর স্ত্রী এবং পুত্রকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। কিন্তু বরাবর শৌভিকের আইনজীবীর দাবি, ‘অযথা তাঁর মক্কেলকে হেফাজতে রাখা হয়েছে’। কিন্তু ইডির জানিয়েছিল, ‘অযথা নয়। এই দুর্নীতিটা কী হয়েছে তা দেখতে হবে। তারা জানায়, যে টাকা উদ্ধার হয়েছে সেটা বাদে আর কী কী পথে টাকা লেনদেন হয়েছে সেটা দেখা হচ্ছে’। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদী এবং বিচারপতি সতীশ চন্দ্র শর্মার বেঞ্চে জামিনের আবেদন করা হয়েছে।