পুবের কলম প্রতিবেদক, ইসলামপুরঃ ‘রূপশ্রী প্রকল্প’-কে হাতিয়ার করে প্রশাসনের চোখে ধুলো দিয়ে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে কিছু অসাধু চক্র। যারা কয়েক হাজার টাকা কমিশনের বিনিময়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে মানুষকে সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছে। ঘটনায় চক্ষু চড়কগাছ প্রশাসনের।
ঘটনা এক– প্রায় পাঁচ বছর আগে বিয়ে হয়েছে। দম্পতির রয়েছে বছর তিনেকের এক কন্যা সন্তান। কিন্তু সে সব তথ্য গোপন রেখেই সরকারের রূপশ্রী প্রকল্পে টাকা পাওয়ার জন্য গোয়ালপোখর ব্লকে আবেদন।
ঘটনা দুই– পাত্রী সাবালিকা নয়। মেয়ের বিয়ের জন্য রূপশ্রী প্রকল্পে অনুদানের আবেদন করেছেন এক বাবা। করণদিঘির ঘটনা।
ঘটনা তিন, বার্ষিক দেড় লক্ষ টাকা আয়– এমন পরিবারগুলিই রূপশ্রী প্রকল্পের ২৫ হাজার টাকার জন্য আবেদন করতে পারে।
কিন্ত যাচাই করতে গিয়ে প্রশাসনিক আধিকারিকরা দেখেন– যা দেখানো হয়েছে বাস্তবে আয় তার তিনগুণ বেশি। চোপড়া ব্লকের ঘটনা।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন– প্রচুর এই ধরনের আবেদন জমা পড়েছিল। তদন্তে এমন প্রমাণ মিলেছে। সেগুলি বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে।
প্রশাসন সূত্রের খবর– চলতি বছরে উত্তর দিনাজপুরে ৬ হাজার ২৭২টি আবেদন জমা পড়েছিল। তার মধ্যে এখনও পর্যন্ত ১২০৬ জনের আবেদন বাতিল করা হয়েছে। বাকি আবেদন পত্রগুলির তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়– ১৮ বছর বয়সের পরে মেয়ের বিয়ে দেওয়ার জন্য রূপশ্রী প্রকল্পে ২৫ হাজার টাকা পায় পরিবার। সে জন্য বিয়ের এক মাস আগে নিমন্ত্রণপত্র– আয়ের শংসাপত্র– পাত্র ও পাত্রীর বয়সের প্রমাণপত্র ব্লক বা পুরসভার নির্দিষ্ট দফতরে জমা দিতে হয়। বার্ষিক দেড় লক্ষ টাকা আয়– এমন পরিবারগুলিই রূপশ্রী প্রকল্পের ২৫ হাজার টাকার জন্য আবেদন করতে পারে।
প্রকল্পের জেলা আধিকারিক অনির্বাণ রায় বলেন, ‘রূপশ্রী প্রকল্প চালু হওয়ার পর থেকে মেয়ের বিয়ের জন্য অভিভাবকদের আর চিন্তা করতে হয় না। সঠিক নথি দিয়ে আবেদন করলেই মেয়ের অ্যাকাউন্টে ২৫ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়।’
প্রশাসন সূত্রের খবর– সম্প্রতি যাঁদের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়েছে– তাঁদের প্রত্যেকের বাড়ি বাড়ি যাওয়া হবে। অনিয়ম ধরা পড়লেই টাকা ফেরত নেওয়া হবে। প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে– অনেক সময় বহু মহিলা কোনও কিছু না বুঝে অসাধু চক্রের ফাঁদে পা দিচ্ছেন। চার-পাঁচ হাজার টাকা কমিশনের বিনিময়ে তাঁদের অ্যাকাউন্টে টাকা লেনদেন করা হচ্ছে। বাকি টাকা নিচ্ছে চক্রটি। এবার এবিষয়ে কড়া নজরদারি শুরু করেছে প্রশাসন।