মালাপ্পুরম: শৈশবে রিমা সাজি সবসময় তার আত্মীয়দের বলতেন, তার স্বপ্ন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করা। আর তখন তাদের প্রতিক্রিয়া ছিল এমন- বিয়ে কর এবং স্বামীর সঙ্গে বিদেশে যাও৷ কিন্তু তিরুরের এই অগ্নিকন্যা সমাজের সেই স্টিরিওটাইপকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছেন অবলীলায়৷ নিজের যোগ্যতায় স্বপ্নের দেশে পাড়ি দেবেন তিনি৷ ২০ বছর বয়সি সাজির ভাষায়, আমার প্রথম লক্ষ্য হল একজন স্বাধীন মহিলা হওয়া৷ সাজি লুইসিয়ানার লেক চার্লসের ম্যাকনিজ স্টেট ইউনিভার্সিটিতে তার কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের পঞ্চম সেমিস্টারে যোগদানের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উড়ে যেতে প্রস্তুত আগামী জানুয়ারিতেই। কুট্টিপুরম এমইএস কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং-এর একজন ছাত্রী রিমা হলেন ভারতের মাত্র পাঁচজন ছাত্রের মধ্যে একজন যিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল আন্ডারগ্র্যাজুয়েট (ইউগ্রেড) এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন৷ এই বিনিময় প্রোগ্রামের লক্ষ্য উদীয়মান ছাত্র নেতাদের এক বৈচিত্র্যময় পরিবেশ প্রদান করা। এটি মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সেমিস্টারের জন্য একটি বৃত্তি। প্রোগ্রামের অধীনে শিক্ষার্থীদের তাদের নিজ শহর থেকে ইউএস হোস্ট কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনামূল্যে রাউন্ড ট্রিপ দেওয়া হবে।
টিউশন, আবাসন এবং খাবারের খরচ বৃত্তির আওতায় থাকবে৷ এর পাশাপাশি তিনি প্রোগ্রামের সময়কালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের খরচ মেটাতে বৃত্তি পাবেন। রিমা গত জানুয়ারিতে স্কলারশিপের জন্য আবেদন করেছিলেন এবং টোফেল পরীক্ষা ও একটি ইন্টারভিউসহ বেশ কয়েকটি প্রক্রিয়ার পর ৯ নভেম্বর নির্বাচিত হন। রিমা বলেন, যখন ইন্টারভিউয়ার জিজ্ঞাসা করলেন কেন তারা আমাকে নির্বাচন করবেন৷ আমি তাদের বলেছিলাম যে আমি আমার মতো অন্যান্য মেয়েদের স্বপ্ন দেখার জন্য অনুপ্রেরণা হব। আমি যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে আসব, আমি সেখানে যে জ্ঞান অর্জন করেছি তা আমার দেশের শিক্ষার্থীদের কাছেও পৌঁছে দেব৷ আত্মীয়রাও এখন আমার কৃতিত্বে গর্বিত। তারা বুঝতে পেরেছে যে বিদেশে যাওয়ার জন্য আমাকে স্বামীর উপর নির্ভর করতে হবে না৷ আমার বাবা মারা যাওয়ার পর আমার মা জোসিয়া শাজি আমাকে এবং আমার বোন তাসনিম সাজির দেখাশোনা করেছিলেন। আমার মা শিক্ষা অর্জন এবং স্বাধীন থাকার জন্য আমার সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা। আমি কেবল তার পরামর্শ চাই।