পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ প্রায় ৮১ .৫ কোটি ভারতীয়র ব্যক্তিগত তথ্য ডার্ক ওয়েবে ফাঁস হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, নাম, ফোন নম্বর, ঠিকানা, আধার, পাসপোর্টের তথ্য সহ ডেটা বিক্রির জন্য অনলাইন বাজারের ছেড়ে দিয়েছে হ্যাকাররা। একটি ব্লগপোস্টে রিসিকিউরিটির হান্টার ইউনিট জানিয়েছে, গত ৯ অক্টোবর ডার্কওয়েবে ‘পিডবলুএন০০০১’ নামের অ্যাকাউন্ট থেকে ওই আধার তথ্যের নিলামের জন্য একাধিক পোস্ট করেছে ওই সাইবার দুষ্কৃতীরা। সেখানে ফাঁস হওয়া তথ্যের চারটি নমুনা ‘স্প্রেড শিট’-এর আকারে প্রকাশ্যে আনা হয়েছে। প্রতিটিতে এক লক্ষ ভারতীয়ের তথ্য রয়েছে। এটিকে দেশের সবথেকে বড় তথ্য ফাঁস কেলেঙ্কারি বলছেন অনেকে। সাড়ে ৮১ কোটি ভারতবাসীর ‘আধার তথ্য’ এখন বিক্রির মুখে। ডার্কওয়েবে রীতিমতো বিজ্ঞাপন দিয়ে চলছে নিলাম। দর হাঁকা হয়েছে ৮০ হাজার মার্কিন ডলার।
চলতি মাসের শুরুতেই মার্কিন সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা রিসিকিউরিটি হান্টার ইউনিটের নজরে এসেছে সেই বিজ্ঞাপন। সেখানে সাইবার দুষ্কৃতীরা সাফ জানিয়েছে, এটি করোনাকালে হওয়া কোভিড পরীক্ষার সময় নথিবদ্ধ করা তথ্যভাণ্ডার। দেশের শীর্ষ চিকিৎসা গবেষণা সংস্থা ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ বা আইসিএমআরের সার্ভার থেকেই তা চুরি করা হয়েছে। গোটা বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই চরম বেকায়দায় পড়েছে মোদি সরকার। কারণ, কোভিড পরীক্ষা সংক্রান্ত তথ্য ন্যাশনাল ইনফরমেটিক্স সেন্টার, আইসিএমআর ও স্বাস্থ্যমন্ত্রকের হাতে ছিল। কাদের গাফিলতিতে তা ফাঁস হল, সেটা নিয়ে তোলপাড় এখন দেশজুড়ে।
ইন্টারনেটের ‘অন্ধকার দুনিয়া’ এই ডার্কওয়েব। গুগল ক্রোম বা ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার জাতীয় সাধারণ সার্চ ইঞ্জিন দিয়ে তাতে ঢোকা যায় না। এর জন্য প্রয়োজন টর: দ্য অনিয়ন রাউটারের মতো ব্রাউজার। অনলাইনে সাধারণত যে কাজকর্ম করা হয়, সেটি ইন্টারনেটের মাত্র ৪-৫ শতাংশ। বাকিটা ওই গোপন এবং বেআইনি কাজকর্মের আখড়া। কারণ, সেখানে কারও কোনওরকম নজরদারি চলে না। তাই সেই ডার্কওয়েবেই নিলামে তোলা হয়েছে সাড়ে ৮১ কোটি ভারতবাসীর নাম, ফোন, আধার, পাসপোর্ট নম্বরের মতো ব্যক্তিগত তথ্য। গোটা ঘটনায় তথ্য সুরক্ষা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যর্থতা প্রকাশ্যে চলে এসেছে।এখনও পর্যন্ত মোদি সরকারের তরফে এব্যাপারে কিছুই জানানো হয়নি। সূত্রের খবর, আইসিএমআর অভিযোগ জানালে দেশের এই সর্ববৃহত্ সাইবার হানার তদন্তভার নিতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা বা সিবিআই।