উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়,জয়নগর :জয়নগরের মোয়া হাবের বারবার জায়গা পরিবর্তন, আদৌ হাব কিনা সন্দিহান জয়নগর বাসী। গোটা দেশের কাছে জয়নগর মোয়ার শহর হিসেবে পরিচিত।শীত পড়ে গেছে খাদ্য প্রেমিক বাঙ্গালীদের আনাগোনা বেড়ে গিয়েছে জয়নগর শহরে। ইতিমধ্যেই জয়নগরের মোয়া জিআই নথিভুক্ত হয়েছে আর তা ঠিক পরে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশে পাড়ি দিয়েছে জয়নগরের মোয়া। কিন্তু বারবার যে জিনিসটি সামনে উঠে এসেছে তা হল মোয়া হাব।এই মোয়া হাব তৈরি হবার কথা গত ২ বছর আগে নিমপীঠে ঠিক হলেও কিছু অসুবিধার কারনে সে জায়গা থেকে মোয়া হাবের জায়গা পরিবর্তন হয়ে জয়নগর মজিলপুর পৌরসভার তৎকালীন পৌরপ্রধান সুজিত সরখেলের উদ্যোগে জয়নগরের সাংসদ প্রতিমা মন্ডলের সহযোগিতায় জয়নগর মিএগঞ্জ হাটের ভেতর এই মোয়া হাবের পরিকল্পনা নেওয়া হয়।সেই মতো খাদি দপ্তর থেকে জয়নগরের সাংসদের উপস্থিতিতে মাটি পরীক্ষা সহ জায়গা পরিদর্শনের কাজ ও হয়ে যায়।একেবারে পুরোপুরি ঠিক ও হয়ে যায় এই এলাকায় পৌরসভার নির্মিত ঘরে সরকারি উদ্যোগে মোয়া হাবের কাজ হবে এবং সব কিছু ঠিকঠাক চললে এবছরের মধ্যেই মিএগঞ্জে মোয়া হাবের কাজ শেষ ও হয়ে যাবে।কিন্তু তার পরেই গত সেপ্টেমবর মাসে আচমকাই সিদ্বান্ত নেওয়া হয় ঐ জায়গায় মোয়া হাবের জন্য গাড়ি ব্যবহারের সমস্যা সহ কিছু টেকনিক্যাল সমস্যার কারনে আবার জায়গা পরিবর্তন হবে। সে মতো পৌরসভার বর্তমান পৌরবোর্ড খাদি দপ্তরের সাথে কথা বলে সিদ্বান্ত নেয় মিএগঞ্জ হাটের পরিবর্তে তাঁরা পুরসভার মাঠের পাশে পড়ে থাকা তিনকাটা জায়গায় ঐ মোয়া হাবের জন্য তুলে দিচ্ছে।সেইমতো খাদি দপ্তর থেকে নতুন জায়গা পরিদর্শন করে পৌরপ্রধানকে নিয়ে। তাঁর পরে নতুন হাবের জায়গা সংক্রান্ত একটি চিঠিও খাদি দপ্তর থেকে সাংসদ প্রতিমা মন্ডলের কাছে পাঠানো হয়।আর নতুন ভাবে ঐ জায়গায় মোয়া হাবের কাজ কবে শেষ হবে এনিয়ে সন্দিহান মোয়া ব্যবসায়ীরা। জয়নগরের মোয়া ব্যবসায়ী খোকন দাস বলেন, ডিপিআর পাঠানোর পরে নতুন ঘর তৈরি হবে যা করতে সময় লেগে যাবে।মিএগঞ্জে প্রাথমিকভাবে কাজ শুরু হলে ভালো হত।জয়নগরের আরেক মোয়া ব্যবসায়ী তিলক কয়াল বলেন,বারবার এইভাবে জায়গা পরিবর্তন হতে হতে মোয়া হাবের কাজ কবে শুরু হবে সেটাই বোধগম্য হচছে না। দ্রুত এই হাব টি চালু হলে আমাদের উপকার হতো।বহড়ুর মোয়া ব্যবসায়ী গনেশ দাস বলেন,দ্রুত মোয়া হাব শুরু হলে ভালো হত। এই হাবের মধ্যে দিয়ে প্যাকেজিং মেশিনে মোয়া রপ্তানির কাজের সুবিধা হত।মোয়ার স্থায়িত্ব বাড়তো।মোয়া হাবের ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান খোদ সাংসদ প্রতিমা মন্ডল। তিনি বলেন,আমি চেয়েছিলাম জয়নগরের মোয়া বিশ্বের দরবারে একটা ভালো জায়গা করুক। তাই তো খাদি দপ্তরের মাধ্যমে জয়নগরে মোয়া হাবের ব্যবস্থা করি তৎকালীন পৌর চেয়ারম্যানের সহায়তায়।মাটি পরীক্ষা করে সব কিছু পরিদর্শন করে খাদি দপ্তর কাজ শুরু করার পরে আচমকাই তাদের পূর্ব নিধারিত জায়গা থেকে সরিয়ে আবার একটা নতুন জায়গা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এই মোয়া হাবকে। বার বার জায়গা পরিবর্তন করার ফলে মোয়া হাবের কাজে বিঘ্ন ঘটছে।তবে এই জায়গা পরিবর্তন নিয়ে আমি স্থানীয় সাংসদ হলেও বর্তমান পৌরবোর্ড আমাকে কিছু জানানোর প্রয়োজন মনে করে নি।জায়গা পরিবর্তন না করে কাজ টা দ্রুত শুরু হলে ভালো হত। জয়নগর মজিলপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান সুকুমার হালদার এব্যাপারে বলেন,মিএগঞ্জ হাটের হাবের সামনের জায়গা ৩০ ফুট না হওয়ায় গাড়ি চলাচলে সমস্যা হবার কারনে ওরাই এই জায়গা বাতিল করেছে। তাই তাদের আবার পুরসভার মাঠের পাশে তিনকাটা জায়গা দেখানো হয়েছে। ওদের জায়গা পছন্দ হয়েছে।মাটি পরীক্ষা করে খুব শ্রীঘ্রই ওখানে মোয়া হাব তৈরি হবে।তবে এব্যাপারে জেলা খাদি বোর্ডের আধিকারিক তপনজ্যোতি দাস বলেন,মিএগঞ্জ হাটের জায়গায় হাবের কাজ শুরুর মুখে ছিল।কিন্তু পৌরসভা থেকে জানানো হয় ঐ হাবের বিল্ডিং অনেক পুরনো, যার ফলে যে কোন সময়ে ক্ষতি হয়ে যেতে পারে সেই কারনে পৌরসভার নতুন জায়গায় স্থানাতরিত করা হবে বলে বোর্ড মিটিংয়ের মধ্যে দিয়ে ঠিক হয়।আমরা পৌরসভার তরফ থেকে জানার পরে নতুন জায়গা পরিদর্শন করে আসি। ওই জায়গাটা ভালো।তবে পৌরসভা ঘর রেডি করার পরেই আমরা কাজ শুরু করতে পারবো।তবে আশা করছি খুব দ্রুত জয়নগরের মোয়া হাব তৈরি হবে। তবে বার বার জায়গা বদল করতে করতে আদৌ মোয়া হাব জয়নগরে হবে তো এই নিয়ে চিন্তায় জয়নগর, বহড়ু ও আশেপাশে এলাকার মোয়ার সাথে যুক্ত মানুষজন। -++
বার বার জায়গা পরিবর্তন, কবে শুরু হবে জয়নগরের মোয়া হাবের কাজ সন্দিহান জয়নগর বাসী