পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ ‘সব বিকল্পের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে’, তালিবানের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে এমনই মন্তব্য করলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রধান মোহন ভাগবত। মোহন ভাগবত তাঁর দশেরার বক্তৃতায় ভারতের সমুদয় বিপদের তালিকা তুলে ধরেন। সেই তালিকায় নাম ছিল তালিবান, চিন, পাকিস্তান, সন্ত্রাস, ওষুধ, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম, মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার এবং ক্রিপ্টোকারেন্সির।
তালিবানের সঙ্গে আলোচনার জন্য ধীরে চলো নীতি নিয়েছে ভারত। আগামী বুধবার মস্কোয় আফগানিস্তান নিয়ে বৈঠক হবে। মধ্যস্থতায় রাশিয়া। সেখানে সেদেশের ‘নয়া’ তালিবান শাসকের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত থাকবেন। সেই বৈঠকে ভারতের প্রতিনিধিরাও থাকবেন বলে শুক্রবার বিভিন্ন সংবাদসংস্থা সূত্রে দাবি করা হয়েছে।
এই আবহে মোহন ভাগবতের সতর্কবাণী, ‘ভারতকে সব ধরনের বিকল্পের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘তালিবান হয়তো বদলে গিয়েছে, কিন্তু পাকিস্তান কি বদলেছে? চিন কি ভারতের প্রতি তার উদ্দেশ্য পরিবর্তন করেছে? হৃদয় পরিবর্তনের সম্ভাবনা, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের বিবেচনা করেই আমাদের এখনও প্রস্তুত থাকতে হবে।’
২০ অক্টোবর মস্কোয় বৈঠক। বৃহস্পতিবার বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেছেন, ‘‘মস্কোর বৈঠকে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ ছিল। আমরা অংশগ্রহণ করব।’’ বিদেশমন্ত্রক সূত্রে খবর, যুগ্মসচিব স্তরের কোনও আধিকারিককে মস্কোয় পাঠানো হবে। যদিও এ ব্যাপারে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
ভারত আফগানিস্তানে বিপুল অঙ্কের বিনিয়োগ করেছে। ফলে আজ না হোক কাল ভারত হয়ত তালিবান সরকারকে মান্যতা দেবে। তা না হলে এই বিপুল বিনোয়োগ নিয়ে সমস্যায় পড়তে হতে পারে নয়া দিল্লিকে। আর সে সুযোগ যে চিন হাতছাড়া করবে না তা বলাই বাহুল্য।
দশেরার ভাষণে এদিকে জম্মু ও কাশ্মীরে হিন্দু-শিখদের হত্যা প্রসঙ্গেও মুখ খোলেন ভাগবত। আরএসএস প্রধান বলেন, ‘জম্মু ও কাশ্মীরের সন্ত্রাসীরা জাতীয় মনোভাবের মানুষদের, বিশেষ করে হিন্দুদের মনোবল কমাতে এই হামলা চালাচ্ছে। উপত্যকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব পুনরায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই তারা সহিংসতা শুরু করেছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দমন ও শেষ করার প্রচেষ্টা আরও দ্রুততার সঙ্গে করা প্রয়োজন।’
দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়েও সংঘের সেই পুরনো উদ্বেগ প্রকাশ করেন মোহন ভাগবত। খ্রিস্টান ও মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে যে ‘কাল্পনিক’ উদ্বেগ আরএসএসের রয়েছে, এদিন তা আর একবার প্রকাশ করেন ভাগবত। আসলে একথা বলে তিনি সংখ্যাগুরু হিন্দুদের এককাট্টা করার চেষ্টা করেছেন। সামনে ইউপি ভোট। বিজেপিকে চাঙ্গা করতে একথা বলা ছাড়া ভাগবতের উপায় নেই। এমনটাই বলছেন অনেকে। বাংলার মুসলিম সংখ্যাকে নিশানা করে ভাগবত বলেন, বাংলায় ‘জনসংখ্যার ভারসাম্য’ নষ্ট হয়েছ। ‘পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনের পরে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে। তাতে হিন্দুদের উপর সরকার অত্যাচার করেছে।’