পুবের কলম প্রতিবেদক: মাঝে মধ্যেই অজ্ঞান হয়ে যেতেন রোগী। মাথায় ব্যথাও করত। জ্ঞান হারিয়ে ফেলার এই সমস্যার চিকিৎসা না করানো হলে যে কোনও মুহূর্তে যেমন মৃত্যু হতে পারত তাঁর। তেমনই, চিকিৎসার জন্য অস্ত্রোপচারের সময়ও সামান্য এদিক-ওদিক হলেও তাঁকে আর বাঁচানো সম্ভব হত না। এমনই অবস্থায় ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিরল অস্ত্রোপচারে এই রোগীকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে আনলেন আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
সপ্তাহ দুই আগে পঞ্চাশোর্ধ্ব এক রোগীকে নিয়ে আসা হয়েছিল আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। সূত্রের খবর, অন্যান্য হাসপাতাল ঘুরে এই রোগীকে নিয়ে আসা হয়েছিল এই হাসপাতালে।
চলতে ফিরতে মাঝে মধ্যেই অজ্ঞান হয়ে যেতেন তিনি। এই হাসপাতালে যখন তাঁকে আনা হয়েছিল তখন তিনি অজ্ঞান অবস্থায় ছিলেন। এখানকার নিউরো সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক দীনেশ জালুকার নেতৃত্বে চিকিৎসকদের একটি দল জরুরি ভিত্তিতে এই রোগীর ব্রেন বা, মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করে তাঁর জ্ঞান ফেরান। তবে, সমস্যার মূল চিকিৎসা তখনও বাকি ছিল। ফলে, এই রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে পর্যবেক্ষণ এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চলতে থাকে প্রস্তুতি।
দেখা যায় এই রোগীর ব্রেনের একেবারে ভিতরে, একদম মধ্য স্থানে, সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে একটি টিউমার রয়েছে। ব্রেনের এই অংশই মানুষের প্রায় সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করে। এই স্থানে সাধারণত কেউ অস্ত্রোপচারের ঝুঁকি নেন না। কারণ: এক, এই স্থানে পৌঁছনোর বিষয়টি যেমন অত্যন্ত কঠিন, তেমনই দুই, সামান্য এদিক-ওদিক হলেই রোগীর জ্ঞান আর ফিরবে না।
ফলে, এই ধরনের অস্ত্রোপচার অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। অথচ, এই রোগীকে সুস্থ করে তুলতে এই স্থানে থাকা টিউমার অস্ত্রোপচার করে বাদ দিতে হবে তাঁর শরীর থেকে। চিকিৎসকরা সিদ্ধান্ত নেন, মাইক্রোস্কপি এবং এন্ডোসকপি, এই দুই পদ্ধতির সহাবস্থান ঘটিয়ে এই অস্ত্রোপচার করা হবে।