শুভজিৎ দেবনাথ ডুয়ার্স: গভীর রামচন্দ্রের বাড়িতে হানা দিলো একপাল বুনো হাতি!ত্রিশ মিনিনের তান্ডবে লন্ড ভন্ড বসত ঘর, লুট করলো ঘরে মজুত করে রাখা রেশনের ১০ কিলো চাল। ঘড়ির কাঁটায় তখন রাত প্রায় তিনটা থেকে সাড়ে তিনটা। আচমকাই বাড়ির পেছনে থাকা বাঁশ বাগানের বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে যায় রামচন্দ্রের স্ত্রী বছর ৪৬- এর বাগচী ওরাওয়ের। মুহূর্তের মধ্যে যেনো ঘরের টিনের চালের ওপর এলোপাথারী বাড়ির শব্দে ঘুম ভেঙে আঁতকে উঠে বাড়ির সকলে। বাইরের থেকে কানে আসতে থাকে পাড়ায় যুবকদের চিৎকার চেঁচামেচি,বাহার হাতি হ্যায় পিছেসে ভাগো। দিশেহারা হয়ে পেছনের দরজা খুলে গোয়াল ঘরের পেছন দিয়ে বাইরে বের হতেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে টিনের চাল। কোনো মতে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে নিরাপদ দূরত্বে গিয়ে লক্ষ্য করেন একপাল হাতি এক নাগাড়ে হামলা চালাচ্ছে তার বাড়িতে। দিশেহারা হয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে এক জোট হয়ে ত্রিশ মিনিট ধরে বাজি পটকা ফাটিয়ে বুনো হাতির পালটিকে জঙ্গলমুখি করতে সক্ষম হয় সকলে।
শনিবার গভীর রাতে এমনই হাড়হিম করা ঘটনার সাক্ষী থাকলো বানারহাট ব্লকের সাঁকোয়াঝোড়-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের কালুয়া কলোনির বাসিন্দা রামচন্দ্র ওরাও এর পরিবার। একনাগাড়ে মিনিট দশেক সময় ধরে চলা হাতির পালের তান্ডবে সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় তার বসতবাড়ি।গ্রামবাসীরা একত্রিত হয়ে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে বাজি পটকা ফাটাতে থাকলে ঘরের ভেতরে রেশন থেকে এনে মজুত করা রাখা আনুমানিক ১০ কিলো চালের ব্যাগ লুট করে শুরে পেঁচিয়ে ধরে পালানোর সময় রান্না ঘরটি ও ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়।
মাঝে মধ্যেই খাবারের সন্ধানে জঙ্গল থেকে এভাবে গ্রামে বুনো হাতির পাল ঢুকে পড়ায় অতিষ্ট হয়ে উঠেছে গ্রামবাসী।অনেকেই বন দফতরের টহলদারির দাবি তুলেছে।রামচন্দ্রের পুত্র আমীর ওরাও জানান, রাত তিনটার সময় প্রথমে বাঁশ বাগানের হামলা চালায়। সেই সময় মা প্রথমে টের পেলে মুহূর্তের মধ্যেই ঘরের টিনের মধ্যে হামলা চালাতে থাকে একপাল বুনো হাতি। আমি পাশের বাড়িতে ছিলাম। মা, বাবা ,ভাই ঘরে ছিলো পেছন দরজা খুলে গোয়াল ঘরের পেছন দিয়ে কোনো রকমে পাশের বাড়িতে আসে আশ্রয় নেয়।এরপর সকলে মিলে চিৎকার করে বোম ফাটালে ঘরটি পুরোপুরি ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে দিয়ে ঘরে মজুত করে রাখা ১০ কিলো রেশনের চাল নিয়ে জঙ্গলের দিকে চলে যায়।পুরো বিষয়টি আমরা আমাদের পঞ্চায়েকে জানিয়েছি।তিনি ক্ষতিপূরণের জন্যে বিষয়টি বন দফতরকে জানাবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।বন দফতরের সূত্রে খবর, তেলিপাড়া কালুয়া কলোনিতে শনিবার রাতে হাতি ঢুকে পড়ার কোনো রকম খবর এসে পৌঁছয়নি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের লোকজন বনদফতরের নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী আবেদন করলে ক্ষতিপূরণ পাবে।